মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডাক বিভাগের নতুন প্রধান হিসেবে ফেডারেল এক্সপ্রেস (FedEx)-এর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ডেভিড স্টেইনারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই নিয়োগ এমন এক সময়ে এলো, যখন দেশটির সরকারি এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাটির বেসরকারিকরণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
শুক্রবার এই খবর জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন।
যুক্তরাষ্ট্রের ডাক বিভাগ, যা ইউএসপিএস (USPS) নামে পরিচিত, দেশটির জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরিষেবা। চিঠিপত্র আদান-প্রদান থেকে শুরু করে জরুরি কাগজপত্র সরবরাহ এবং বাণিজ্যের প্রসারে এর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
বাংলাদেশের পোস্ট অফিসের মতো, ইউএসপিএসও যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের কাছে একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। ডেভিড স্টেইনার এখন এই বিশাল সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, যেখানে প্রায় ৬ লক্ষ ৩৫ হাজার কর্মী কাজ করেন।
ডেভিড স্টেইনারের নিয়োগের সিদ্ধান্তের পরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর কারণ হলো, স্টেইনার এক সময় বেসরকারি কুরিয়ার সংস্থা ফেডারেল এক্সপ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
সমালোচকদের মতে, এটি স্বার্থের সংঘাতের একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ। কারণ, ফেডারেল এক্সপ্রেস ইউএসপিএস-এর ব্যবসায়িক প্রতিযোগী।
এই নিয়োগের আগে, ইউএসপিএস-এর প্রধান ছিলেন লুই ডি’জয়। তিনি গত মার্চ মাসে পদত্যাগ করেন।
ডি’জয়-এর সময়ে ডাক বিভাগে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে, বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারীর সময়কালে এবং নির্বাচনের সময়কালে যখন ডাকযোগে ভোটের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল।
ডেভিড স্টেইনার অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি ইউএসপিএস-এর স্বাধীনতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের জনসেবামূলক এবং ব্যবসায়িক লক্ষ্যকে তিনি গভীরভাবে শ্রদ্ধা করেন।
অন্যদিকে, এই নিয়োগের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন ডেমোক্রেট দলের প্রতিনিধি, গেরি কনেলি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইউএসপিএস-কে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে।
জানা যায়, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউএসপিএস-এ বড় ধরনের পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন। এমনকি তিনি সংস্থাটিকে বাণিজ্য সচিবের অধীনে আনারও প্রস্তাব করেছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে, ডেভিড স্টেইনারের নতুন দায়িত্ব গ্রহণ ইউএসপিএস-এর ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। সবার দৃষ্টি এখন তার কার্যক্রমের দিকে, বিশেষ করে এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার স্বাধীনতা এবং কার্যকারিতা কিভাবে বজায় থাকে, সেদিকে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন