বহু বছর আগে, শুক্র গ্রহে অভিযান চালানোর উদ্দেশ্যে পাঠানো একটি সোভিয়েত মহাকাশযান, ‘কোসমস ৪৮২’, এই সপ্তাহে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করতে চলেছে।
প্রায় ৫৩ বছর আগে, ১৯৭২ সালে উৎক্ষেপণের সময় এটির মূল লক্ষ্য ছিল সৌরজগতের সবচেয়ে উষ্ণ গ্রহ শুক্রে অবতরণ করা। কিন্তু একটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেটি কক্ষপথে আটকে যায়, এবং এরপর থেকে এটি পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছিল।
বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, শনিবারের মধ্যে এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে। যদিও এর ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম, কারণ এটি সম্ভবত সমুদ্র বা জনশূন্য কোন অঞ্চলে পতিত হবে।
কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী মার্সিন পিলিনস্কি বলেছেন, “জনবহুল এলাকায় এর আঘাত হানার সম্ভাবনা খুবই নগণ্য।
মহাকাশযানটি প্রায় এক মিটার আকারের এবং এর ওজন ছিল প্রায় ৫০০ কিলোগ্রাম। এটি মূলত টাইটানিয়াম ধাতু দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে প্রবেশের সময় এটি সম্ভবত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে এর কিছু অংশ টিকে থাকতে পারে।
ডাচ বিজ্ঞানী মার্কো ল্যাংব্রুক অনুমান করেছেন, যদি মহাকাশযানটি সম্পূর্ণ অক্ষত থাকে, তাহলে এটি ঘণ্টায় প্রায় ২৪২ কিলোমিটার বেগে পৃথিবীতে আঘাত হানবে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন, তাদের ভেনেরা প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে, এই মহাকাশযানটি পাঠিয়েছিল। কিন্তু উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হওয়ায় এটি আর শুক্র গ্রহে পৌঁছাতে পারেনি।
এই ঘটনার পর, কোসমস ৪৮২-এর ধ্বংসাবশেষ রাশিয়ার সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা হবে, যা জাতিসংঘের একটি চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়েছে।
এটি ঠান্ডা যুদ্ধের সময়কার মহাকাশ প্রতিযোগিতার একটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই মহাকাশ বিজয়ের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিল।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস