জার্মানিতে পাওয়া প্রাচীন কাঠের তৈরি কিছু বর্শা সম্ভবত নিয়াণ্ডারথাল মানবগোষ্ঠীর তৈরি। নতুন এক গবেষণায় এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।
বর্শাগুলো যে সময়ে তৈরি হয়েছিল, বিজ্ঞানীরা আগে সেটির থেকে কম সময়কাল নির্ধারণ করেছেন।
গত কয়েক দশক আগে জার্মানির শোনিংগেন শহরে কয়লার খনিতে এই বর্শাগুলো পাওয়া গিয়েছিল। বর্শাগুলোর সঙ্গে ঘোড়ার প্রায় ৫০টি দেহাবশেষও পাওয়া গেছে।
স্প্রুস ও পাইন কাঠ দিয়ে তৈরি এই বর্শাগুলো শিকারের প্রাচীনতম হাতিয়ারগুলোর মধ্যে অন্যতম।
আগে ধারণা করা হতো, বর্শাগুলো প্রায় ৩ লক্ষ বছর আগের। সেই হিসেবে, হোমো হাইডেলবার্গেনসিস নামক আদি মানবগোষ্ঠী, যাদেরকে মানুষ ও নিয়াণ্ডারথালদের পূর্বপুরুষ হিসেবে মনে করা হয়, তারাই হয়তো এগুলো ব্যবহার করতেন।
তবে, নতুন বিশ্লেষণ বলছে বর্শাগুলোর বয়স ২ লক্ষ বছর। বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, এই নতুন সময়কালের কারণে ধারণা করা হচ্ছে, নিয়াণ্ডারথালরাই হয়তো এগুলো ব্যবহার করতেন।
সম্প্রতি কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়াণ্ডারথালরা আদি মানুষের সঙ্গে মিশেছিল এবং তাদের মধ্যে প্রজননও হয়েছিল।
সুগঠিত ও ভালোভাবে তৈরি করা এই বর্শাগুলো নিয়াণ্ডারথালদের সক্ষমতা এবং শিকারের কৌশল সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে।
স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্টোরির গবেষক জ্যারড হাটসন বলেন, “এত পুরনো একটা জিনিসের জন্য বর্শাগুলো বেশ উন্নত।”
তবে, নতুন এই সময়কালের সঙ্গে আগের হিসাবের অমিল কেন হচ্ছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
গটিংগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ থমাস টারবার্গার মনে করেন, বর্শাগুলোর বয়স এবং কারা এগুলো ব্যবহার করত, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
তিনি নতুন এই গবেষণায় জড়িত ছিলেন না। টারবার্গার বলেন, “আমি এই যুক্তিতর্কগুলোকে আকর্ষণীয় মনে করি, তবে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নই।”
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস