সোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফিকোর মস্কো সফর: বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদ
সোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর সম্প্রতি মস্কো সফরকে কেন্দ্র করে দেশটির বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ফিকো রাশিয়ায় গিয়েছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কোনো দেশের প্রধান হিসেবে তিনিই ছিলেন একমাত্র নেতা যিনি এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীরা রাজধানী ব্রাতিস্লাভায় সমবেত হয়ে “আমরা ফিকোর আর সহ্য করতে পারছি না,” “সোভাকিয়া ইউরোপের সঙ্গে আছে,” এবং “ওখানেই থাকুন” -এরকম বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, ফিকো সমগ্র সোভাকিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন না। বিরোধী দলীয় নেতারা এই সফরকে সোভাকিয়ার জন্য “লজ্জাজনক” এবং পররাষ্ট্র নীতির “সবচেয়ে খারাপ মুহূর্ত” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বিরোধী দল প্রগ্রেসিভ স্লোভাকিয়া পার্টির নেতা মিশাল সিমেকা বলেন, “এই সফর সোভাকিয়ার জন্য লজ্জাজনক।” উল্লেখ্য, ফিকোর দল বামপন্থী স্মের (ডাইরেকশন) ২০১৪ সালে রাশিয়াপন্থী এবং মার্কিন বিরোধী একটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নির্বাচনে জয়লাভ করে। এর পর থেকেই তিনি ইউক্রেন ইস্যুতে ইইউ-এর নীতির বিরোধিতা করে আসছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে রুশ সেনাদের প্রশংসা করেন এবং ইউক্রেনে তাদের সাহসিকতার কথা উল্লেখ করেন। অন্যদিকে, ফিকো এক ভিডিও বার্তায় জানান, তার লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার সঙ্গে “স্বাভাবিক, বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা” স্থাপন করা।
সোভাকিয়ার বিভিন্ন শহরে এই বিক্ষোভগুলো মূলত ডিসেম্বরে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য ফিকোর মস্কো সফরের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিকোর এই পদক্ষেপ দেশের অভ্যন্তরে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমালোচিত হয়েছে।
প্রতিবাদকারীরা মনে করেন, ফিকোর এই সফর সোভাকিয়ার পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কে ফাটল ধরাবে। তারা আশঙ্কা করছেন, এর ফলে দেশের বৈদেশিক নীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে। এই ঘটনা, কোনো দেশের প্রধানের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে জনগণের মধ্যে মতবিরোধের একটি উদাহরণ তৈরি করেছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস