নিউজিল্যান্ডে শিশুদের নামকরণে চরম নিষেধাজ্ঞা! তালিকায় কিম কার্দাশিয়ানের পছন্দের নামও?

শিরোনাম: নিউজিল্যান্ডে ২০২৩ সালে ৩৮টি নাম নিষিদ্ধ, তালিকায় রয়েছে ‘কিং’-এর আধিক্য

নতুন প্রজন্মের শিশুদের নামকরণের ক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড সরকার বেশ কিছু কঠোর নিয়মকানুন তৈরি করেছে। ২০২৩ সালে দেশটির সরকার ৩৮টি নাম শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডে শিশুদের নাম রাখার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মানতে হয়। যেমন, কোনো নাম আপত্তিকর হতে পারবে না, কোনো পদ বা উপাধি নির্দেশ করতে পারবে না, নামের আকার অতিরিক্ত বড় হওয়া চলবে না এবং সংখ্যা বা প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ডে প্রায় ৬0,০০০ শিশু জন্ম নিয়েছে।

এদের মধ্যে ৭৯টি নামের প্রস্তাবনা বাতিল করা হয়েছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ক দপ্তরের প্রধান উপদেষ্টা জন ক্রফোর্ড-স্মিথ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, “আমরা অভিভাবকদের শিশুদের নাম বেছে নেওয়ার বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়ার জন্য উৎসাহিত করি। নাম একটি মূল্যবান উপহার, যা শিশুদের সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হয়।”

নিষিদ্ধ হওয়া নামগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার প্রস্তাব করা হয়েছিল ‘কিং’ নামটি। ২০২৩ সালে এই নাম ১১ বার প্রস্তাব করা হলেও তা গৃহীত হয়নি। এছাড়া ‘প্রিন্স’ নামটিও ১০ বার প্রস্তাব করা হয়েছিল।

রাজকীয় নামের মধ্যে ‘প্রিন্সেস’ এবং ‘প্রিন্সেস’ নামও যথাক্রমে চার এবং দুই বার প্রস্তাব করা হলেও তা বাতিল করা হয়।

এছাড়াও, গাঁজার সঙ্গে সম্পর্কিত ‘সাটিভা’ নামটি তিনবার প্রস্তাব করা হয়েছিল এবং তা গৃহীত হয়নি। ‘রোগ’ নামটিও বাতিল করা হয়েছে।

অন্যান্য বাতিল হওয়া নামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সিজার’, ‘জেপি’। রাজকীয় নামের মধ্যে ‘বিশপ’, ‘ক্রাউন’, ‘ডিউক’, ‘এমপেরর’, ‘কিং’, ‘লেডি’, ‘ম্যাজেস্টি’, ‘প্রিন্জ’, ‘কুইন’, ‘রয়্যাল’ এর মতো নামও বাতিল করা হয়েছে।

ধ*র্মীয় নামের মধ্যে ‘আল্লাহ’, ‘মেসায়া’, ‘সেইন্ট’ ইত্যাদি নামও তালিকাভুক্ত ছিল। এছাড়াও, সামরিক পদবি যেমন ‘জেনারেল’, ‘মেজর’ এবং ‘ফ্যানি’, ‘আইস’, ‘ইন্ডিকা’, ‘জুক’, ‘জাস্টিস’, ‘কেসি’ এবং ‘সলভেইন’-এর মতো নামগুলোও অনুমোদন পায়নি।

উল্লেখ্য, হলিউড তারকা কিম কার্দাশিয়ান ও কানইয়ে ওয়েস্ট তাদের ছেলের নাম রেখেছেন ‘সেইন্ট ওয়েস্ট’।

নামকরণ বিষয়ক এই কড়াকড়ি নিউজিল্যান্ডে বিদ্যমান থাকলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিস্থিতি ভিন্ন। সেখানে অঙ্গরাজ্য ভেদে নামকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের নিয়ম প্রচলিত রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, হাওয়াই, ইন্ডিয়ানা, মন্টানা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, ওরেগন, সাউথ ক্যারোলিনা, এবং টেনেসির মতো রাজ্যগুলো বিশেষ অক্ষর ও প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি দেয়।

কিছু রাজ্যে নামের অক্ষরের সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। অ্যারিজোনায় নামের প্রথম অংশের জন্য সর্বোচ্চ ৪৫টি, মাঝের অংশের জন্য ৪৫টি, এবং শেষ অংশের জন্য ৪৫টি অক্ষর ব্যবহার করা যেতে পারে।

মিনেসোটায় একটি নামের জন্য সর্বোচ্চ ১৫০টি অক্ষর ব্যবহার করার নিয়ম রয়েছে। নিউ হ্যাম্পশায়ার এবং টেক্সাসে নামের মোট দৈর্ঘ্য ১০০ অক্ষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ। অন্যদিকে, নিউইয়র্কে প্রথম ও মাঝের নাম ৩০ অক্ষরের বেশি এবং পদবি ৪০ অক্ষরের বেশি হতে পারবে না।

বাংলাদেশে শিশুদের নামকরণের ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ নেই। তবে, একটি সুন্দর অর্থবহ নাম রাখার প্রবণতা এখানে দেখা যায়। এছাড়া, অনেক পরিবারে শিশুদের নামকরণে ধর্মীয় ও সামাজিক ঐতিহ্য অনুসরণ করা হয়।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *