গ্রীষ্মে ইউরোপ: বন্যজীবন উপভোগের সেরা স্থানগুলি!

ইউরোপে গ্রীষ্মকালে বন্যজীবন: ঘুরে আসার মতো ৬টি অসাধারণ স্থান

প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য ইউরোপ যেন এক স্বর্গরাজ্য। ঘন বনভূমি, উঁচু পর্বতমালা আর সমুদ্রবেষ্টিত দ্বীপগুলোতে গ্রীষ্মকালে বন্যপ্রাণীর দেখা মেলে। যারা প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য ইউরোপের কয়েকটি আকর্ষণীয় স্থান তুলে ধরা হলো।

১. সেন্ট কিল্ডা, স্কটল্যান্ড: স্কটল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সেন্ট কিল্ডা দ্বীপপুঞ্জ তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে বিশাল সমুদ্রপাখি ও আটলান্টিক পাফিন পাখির বৃহত্তম কলোনি। গ্রীষ্মকালে এখানে গেলে ডলফিন, অ র্কা ও হ্যাম্পব্যাক তিমি’র দেখা পাওয়া যায়। এখানকার নির্জন পরিবেশে বন্যজীবন উপভোগ করার এক দারুণ সুযোগ রয়েছে।

২. ফাগারাস পর্বতমালা, রোমানিয়া: রোমানিয়ার ফাগারাস পর্বতমালায় রয়েছে বিশাল বনভূমি। এখানে ভালুক, লিঙ্কস, নেকড়ে, বাইসন এবং বিভারের মতো বন্যপ্রাণীর দেখা মেলে। শীতকালে সাদা বরফের চাদরে ঢেকে যায় পাহাড়, আর গ্রীষ্মে সবুজ ঘাস আর নানা ধরনের ফুলের সমাহার মন জয় করে নেয়। এখানে একটি জাতীয় উদ্যান তৈরির পরিকল্পনা চলছে, যা ইউরোপের অন্যতম আকর্ষণ হতে পারে।

৩. আজোরিজ দ্বীপপুঞ্জ, পর্তুগাল: পর্তুগালের এই দ্বীপপুঞ্জটি আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝে অবস্থিত। এখানে গ্রীষ্মকালে নীল তিমি, হাম্পব্যাক তিমি ও পাইলট তিমি’র আনাগোনা দেখা যায়। এছাড়া, স্পার্ম তিমি এখানে সারা বছরই থাকে। স্কুবা ডাইভিং-এর মাধ্যমে আগস্ট মাসে হ্যামারহেড শার্ক, ডেভিল রে, বারাকুডা এবং লগারহেড কচ্ছপের মতো সামুদ্রিক প্রাণীদের দেখা যেতে পারে।

৪. বার্গস্লাগেন বন, সুইডেন: স্টকহোমের খুব কাছেই বার্গস্লাগেন বন। এখানকার বনভূমি, সবুজ প্রান্তর আর শান্ত হ্রদগুলো নেকড়ে, বিভার, ভালুক ও মুজের মতো প্রাণীদের আবাসস্থল। এখানকার গাইডরা আপনাকে এই বিশাল প্রাণীগুলোকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করতে পারে।

৫. ভ্যানোইজ ন্যাশনাল পার্ক, ফ্রান্স: ফ্রান্সের আল্পস অঞ্চলে অবস্থিত এই পার্কটি পর্বতারোহীদের জন্য একটি প্রিয় গন্তব্য। এখানে গ্রীষ্মকালে আইবেক্স ও চাময়িসের মতো প্রাণী দেখা যায়। এছাড়া, এখানে ঈগল জাতীয় পাখিও দেখা যায়, যাদেরকে একসময় এই অঞ্চল থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তবে বর্তমানে তাদের সংখ্যা বাড়ছে।

৬. সোয়ালবার্ড, নরওয়ে: আর্কটিক সার্কেল ও উত্তর মেরুর কাছাকাছি অবস্থিত সোয়ালবার্ড দ্বীপপুঞ্জ। এখানে পোলার বিয়ার, ওয়ালরাস, তিমি, সি-বার্ড এবং আর্কটিক ফক্স-এর মতো আর্কটিক অঞ্চলের বন্যপ্রাণী দেখা যায়। বিশেষ করে স্পিটসবার্গের উত্তরে গ্রীষ্মকালে এদের আনাগোনা বাড়ে। ছোট জাহাজে করে এখানে ভ্রমণ করাটা বেশ উপভোগ্য হতে পারে।

ইউরোপের এই স্থানগুলো বন্যজীবন উপভোগের জন্য সত্যিই অসাধারণ। যারা প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী ভালোবাসেন, তারা গ্রীষ্মকালে এইসব স্থানগুলোতে ভ্রমণ করতে পারেন।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *