বিয়ে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান, যা বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। বিয়ে উপলক্ষ্যে বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকে, যা আনন্দ ও উৎসবের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তবে, বিয়ের বিভিন্ন আয়োজনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে সমন্বয় করতে গিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি, অনলাইনে একটি ঘটনা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, যেখানে বিয়ের আগের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হতে পারার কারণে এক কনে ও তার বান্ধবীর মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন কনে জানতে পারেন যে, তার এক বান্ধবী, যিনি বিয়ের কনেযাত্রীর একজন, তিনি বিয়ের আগের রাতে অনুষ্ঠিতব্য একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। কারণ হিসেবে জানা যায়, বান্ধবীর ছোট সন্তানের দেখাশোনার জন্য তার পক্ষে ওই সময়ে অন্য কোথাও যাওয়া সম্ভব নয়।
কনে বিষয়টি নিয়ে বেশ মনক্ষুণ্ণ হন, কারণ তার প্রত্যাশা ছিল, বান্ধবী বিয়ের আগের দিনসহ পুরো অনুষ্ঠানেই তার পাশে থাকবেন।
জানা গেছে, কনে ও তার বান্ধবীর বিয়ে আগামী বসন্তে অনুষ্ঠিত হবে। বিয়ের দিনটিতে বান্ধবীর মা তাদের সন্তানের দেখাশোনা করবেন, তাই তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন।
তবে, বিয়ের আগের রাতে বান্ধবীর স্বামী বাড়িতে থাকলেও, তিনি সন্তানকে একা রেখে যেতে রাজি নন। কনে মনে করেন, বিয়ের অনুষ্ঠান যেহেতু বাড়ি থেকে দূরে হচ্ছে, তাই কনেযাত্রীর ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকাটা জরুরি।
তার মতে, এটা শুধু কনে হিসেবে তার বায়না নয়, বরং একটি স্বাভাবিক প্রত্যাশা।
বিষয়টি নিয়ে কনে একটি অনলাইন ফোরামে তার উদ্বেগের কথা জানান। সেখানে তিনি জানতে চান, তার এই অনুযোগ কতটা যুক্তিসঙ্গত।
ফোরামের ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেকেই কনের সঙ্গে একমত হতে পারেননি। তাদের মতে, সন্তানের মা হওয়ায় বান্ধবীর এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানো উচিত।
এমনকি অনেকে এমনও মন্তব্য করেছেন যে, কনে সম্ভবত বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারছেন না, কারণ তার নিজের সন্তান নেই।
ফোরামে অনুষ্ঠিত একটি জরিপে দেখা যায়, প্রায় ১,৭০০ জনের মধ্যে ৯৮ শতাংশ ব্যবহারকারী কনের এই অভিযোগকে সমর্থন করেননি। তাদের মতে, বান্ধবী তার সন্তানের প্রতি দায়িত্ব পালন করছেন, যা অত্যন্ত স্বাভাবিক।
এছাড়া, কনেযাত্রী হিসেবে বিভিন্ন খরচ, যেমন – পোশাক, মেকআপ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়াদির কারণেও অনেক সময় আর্থিক চাপ সৃষ্টি হয়।
মূলত, এই ঘটনাটি বন্ধুত্বের সম্পর্ক এবং পারিবারিক দায়িত্বের মধ্যেকার একটি সূক্ষ্ম টানাপোড়েনকে তুলে ধরে। যেখানে একদিকে কনে তার বান্ধবীর সমর্থন প্রত্যাশা করছেন, অন্যদিকে সন্তানের প্রতি মায়ের দায়িত্ববোধকে অস্বীকার করা যাচ্ছে না।
এই ঘটনার মাধ্যমে সমাজে বিদ্যমান সম্পর্কের জটিলতা এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মানুষের অনুভূতির ভিন্নতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
তথ্য সূত্র: পিপল