ফিরে আসছে লামব্রুসকো! ইতালির গোপন গল্প, যা কাঁপিয়ে দেবে বিশ্ব!

ইতালির একটি বিশেষ ধরনের স্পার্কলিং ওয়াইন, ল্যামব্রুসকো, আবারও বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করেছে। কয়েক দশক আগেও এই ওয়াইনটির খ্যাতি তেমন ভালো ছিল না।

কিন্তু এখন এর স্বাদ এবং উৎপাদন প্রক্রিয়ার পরিবর্তনের ফলে এটি খাদ্যরসিকদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি, *ট্রাভেল + লেজার* ম্যাগাজিনের একটি প্রতিবেদনে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

ল্যামব্রুসকো মূলত ইতালির এমিলিয়া-রোমাগনা অঞ্চলের একটি পণ্য। একসময়, এই ওয়াইনটির একটি মিষ্টি সংস্করণ বহুলভাবে রপ্তানি করা হতো, যা এর আসল স্বাদের থেকে ভিন্ন ছিল।

এর ফলস্বরূপ, আন্তর্জাতিক বাজারে ল্যামব্রুসকোর ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিন্তু এখন, স্থানীয় ওয়াইন প্রস্তুতকারকরা তাদের ঐতিহ্যবাহী, শুকনো এবং বিভিন্ন ধরনের ল্যামব্রুসকো নিয়ে আসছেন, যা দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

এই ওয়াইন প্রস্তুতকারকদের মধ্যে অন্যতম হলেন মাতিয়া মন্টানারি। তিনি ক্যাস্টেলভেট্রো ডি মোডেনা অঞ্চলের বাসিন্দা এবং গ্রাসপারোসা নামের একটি বিশেষ আঙুর ব্যবহার করেন।

তিনি জানান, ল্যামব্রুসকো তৈরির প্রক্রিয়া অত্যন্ত যত্নসহকারে সম্পন্ন করা হয়। আঙুর থেকে শুরু করে বোতলজাত করা পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়, যাতে ওয়াইনটির আসল স্বাদ বজায় থাকে।

তার মতে, ল্যামব্রুসকোর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো এর বহুমুখীতা। এটি সাদা, গোলাপী এবং লাল—বিভিন্ন রঙে পাওয়া যায়।

তাছাড়া, এর স্বাদ শুকনো থেকে শুরু করে হালকা মিষ্টিও হতে পারে, যা বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে উপভোগ করা যায়।

আরেকজন সফল ওয়াইন প্রস্তুতকারক হলেন সিসিলিয়া পালট্রিনিয়েরি। তিনি চতুর্থ প্রজন্মের ওয়াইন প্রস্তুতকারক এবং তার পরিবারের ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন।

তিনি বলেন মানুষ এখন ভারী এবং জটিল স্বাদের পরিবর্তে হালকা ও সহজে পান করা যায় এমন ওয়াইনের দিকে ঝুঁকছে।

তাই, ল্যামব্রুসকোর চাহিদা বাড়ছে। তার তৈরি ‘রাডিস’ নামের একটি গোলাপী ল্যামব্রুসকো বিশেষভাবে পরিচিত, যা হালকা অম্লতা এবং ফলের স্বাদযুক্ত।

শুধু উৎপাদন প্রক্রিয়াই নয়, ইতালির অনেক ওয়াইনারি এখন পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। কানটিনা ভেন্টিভেন্টি নামের একটি আধুনিক ওয়াইনারি, যেখানে অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলী ব্যবহার করা হয়েছে।

এখানে আগতরা ল্যামব্রুসকোর স্বাদ উপভোগ করার পাশাপাশি, সুন্দর পরিবেশে সময় কাটাতে পারেন। অন্যদিকে, রিলেইস রনকোলো ১৮৮৮-এর মতো পুরনো ভিলাগুলোতেও পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা ল্যামব্রুসকোর অভিজ্ঞতাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

এই ওয়াইন প্রস্তুতকারকদের উদ্যম এবং পরিবর্তনের ফলে ল্যামব্রুসকো আবার তার হারানো গৌরব ফিরে পাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে খাদ্যরসিক এবং ওয়াইন প্রেমীরা এখন এর নতুন স্বাদ গ্রহণ করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

এই পরিবর্তনের ঢেউ বাংলাদেশের খাদ্য সংস্কৃতিতেও লাগবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: *ট্রাভেল + লেজার*

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *