জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘রুপল’স ড্র্যাগ রেস’-এর তারকা দেজা স্কাই ওজন কমানোর অস্ত্রোপচারের পর মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতার শিকার হয়েছেন। অস্ত্রোপচারের পর প্রায় ৬০ পাউন্ড ওজন কমানোর পর তার শরীরে দেখা দেয় রক্তের জমাট বাঁধার মতো গুরুতর সমস্যা, যা তার জীবন প্রায় কেড়ে নিয়েছিল।
আসুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক এই ঘটনার পেছনের কথা।
দেজা স্কাই, যিনি ‘রুপল’স ড্র্যাগ রেস’-এর ১৪তম সিজনে খ্যাতি অর্জন করেন, সম্প্রতি ‘রুপল’স ড্র্যাগ রেস অল স্টারস’-এর দশম সিজনে ফিরে এসেছেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি তার জীবনের এক কঠিন অধ্যায় নিয়ে মুখ খুলেছেন।
মেক্সিকোতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লাইপোসাকশন ও পেট টানটান করার মতো অস্ত্রোপচার করান তিনি। এরপরেই তার শরীরে দেখা দেয় নানা জটিলতা।
চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে তিনি বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হন। একবার পরীক্ষার পর জানা যায়, তার ফুসফুস ও পায়ে রক্ত জমাট বেঁধেছে, যার কারণে তিনি হাঁটাচলার ক্ষমতা হারাতে বসেন।
এই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি জানান, অস্ত্রোপচারের পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং হতাশ হয়ে নিজেকে প্রশ্ন করেছিলেন, কেন তিনি এমনটা করলেন।
দেজা স্কাইয়ের কথায়, “যদি এক হাজার ভাগ সত্যি বলতে হয়, তাহলে বলব কেউ আমাকে বলেনি ওজন কমাতে। আমি নিজেই এটা নিয়ে অনেক ভেবেছি।
হয়তো ভেবেছিলাম, এটা করলে আমার ক্যারিয়ারে সুবিধা হবে, অথবা আমার ড্র্যাগ আরও ভালো হবে। কিন্তু সত্যি বলতে, আমার সবকিছু তো ছিলই। আমি এখনো জানি না কেন আমি এটা করেছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “আমি কি এখন অনুশোচনা করি? অবশ্যই করি। আমি হয়তো এখন আগের চেয়ে রোগা, কিন্তু আমি তো প্রায় মরেই যাচ্ছিলাম।
এটা আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে, মনের ভেতরের কথাগুলো কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। এখন আমি ভালো থাকতে চাই।”
দেজা স্কাইয়ের এই অস্ত্রোপচারের পর মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। তিনি জানান, একা এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করাটা তার জন্য খুবই কঠিন ছিল।
তিনি বলেন, “জীবনে কখনো ডিপ্রেশনে ভুগিনি, কিন্তু পজিটিভ থাকাটা কঠিন হয়ে পড়েছিল। উদ্বেগের (anxiety) অভিজ্ঞতাও আগে হয়নি।
এটা সত্যিই খুব কঠিন ছিল।”
এই ঘটনার আগে, মেক্সিকোতে থাকাকালীন তার ত্বক হলুদ হয়ে যেতে শুরু করে। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে তিনবার রক্ত দেওয়া হয়।
দুই সপ্তাহ পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন। সেখানেও তার সমস্যা চলতেই থাকে। চিকিৎসকেরা রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা দূর করতে ওষুধ দেন।
এছাড়াও, তিনি কয়েক দিন পরপর বমি করতে শুরু করেন।
দেজা স্কাই আরও বলেন, “আমার শরীর সম্ভবত অস্ত্রোপচারের জন্য প্রস্তুত ছিল না। অস্ত্রোপচারের আগে আমি কখনো এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাইনি।
আমার শরীর যেন একটা বিশাল আঘাতের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। সেরে ওঠাটা খুব ধীর প্রক্রিয়া ছিল এবং আমি এটা নিয়ে সেভাবে ভাবিনি।”
যারা লাইপোসাকশন এবং পেট টানটান করার মতো অস্ত্রোপচার করার কথা ভাবছেন, তাদের উদ্দেশ্যে দেজা স্কাই বলেন, “অবশ্যই ভালোভাবে গবেষণা করুন। একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন এবং নিশ্চিত করুন আপনার শরীর এই ধরনের অস্ত্রোপচারের জন্য উপযুক্ত।”
স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো অস্ত্রোপচারের আগে শরীরের সক্ষমতা ও ঝুঁকিগুলো ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। বিশেষ করে, ওজন কমানোর অস্ত্রোপচার শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
তাই অস্ত্রোপচারের আগে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া এবং শরীরের অবস্থা বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: পিপল