ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্প্রতি উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার পর, উভয় দেশই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। এই ঘটনার পেছনের কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যদিও অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, পরিস্থিতি শান্ত করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা যতটা বলা হচ্ছে, সম্ভবত ততটা ছিল না।
সংবাদ সংস্থা সিএনএন-এর একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত এলাকায় তীব্র গোলাগুলি চলছিল।
এর মধ্যেই ট্রাম্প তাঁর ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে পেরেছে। ট্রাম্পের এই ঘোষণার কয়েক দিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স এই সংঘাতকে ‘আমাদের বিষয় নয়’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।
উত্তেজনার সূত্রপাত হয়, গত মাসে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে একটি সন্ত্রাসী হামলায়, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক।
এর পরেই ভারত বিমান হামলা চালায়, যার জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা আক্রমণ করে। পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। যদিও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই দাবি অস্বীকার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, তিনি এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স, উভয় দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য তাঁদের রাজি করিয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেও, ভারত পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায়, যার ফলশ্রুতিতে পাকিস্তানও ভারতের বিভিন্ন স্থানে রকেট, আর্টিলারি ও ড্রোন হামলা চালায়। এতে উভয় দেশেই প্রতিশোধের দাবি জোরালো হতে দেখা যায়।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপট নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। ইসলামাবাদ যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশংসা করেছে, নয়াদিল্লি সেখানে তাদের ভূমিকা খাটো করে দেখিয়েছে।
ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই এই যুদ্ধবিরতি করতে সক্ষম হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধবিরতি কার্যত উভয় দেশের জন্যই প্রয়োজনীয় ছিল। তাই যুক্তরাষ্ট্র হয়তো পরিস্থিতি শান্ত করতে একটি সুযোগ তৈরি করেছে, কিন্তু মূল কাজটি ছিল দুই দেশেরই।
ট্রাম্প সম্ভবত ইউক্রেনে রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সংঘাতের সমাধানেও একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিলেন। তবে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার এই সংক্ষিপ্ত সময়ের যুদ্ধ, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের তুলনায় অনেক দ্রুত সমাধান হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন