অভাবনীয় এক লড়াইয়ের সাক্ষী, ছোট্ট ম্যাটি। বিরল এক লিভারের রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ১৮৫ দিন কাটানো এই শিশুর জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন ৮০ জন নার্স।
ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোর একটি হাসপাতালে বিরল রোগ ‘বিলিয়ারি অ্যাট্রেসিয়া’ নিয়ে জন্ম হয় ম্যাটির। জন্মের পর মাত্র দুই মাস বয়সেই তার লিভারের কার্যকারিতা কমতে শুরু করে।
জীবন বাঁচাতে প্রয়োজন ছিল লিভার প্রতিস্থাপন।
কিন্তু অস্ত্রোপচারের আগে ম্যাটির শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তাকে বাঁচানোই কঠিন হয়ে পড়েছিল।
চিকিৎসকরা যখন প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন, ঠিক তখনই এগিয়ে আসেন হাসপাতালের নার্সরা।
তারা ম্যাটিকে সুস্থ করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালান। এমনকি, পরীক্ষামূলক চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করতেও পিছপা হননি তারা।
নার্সদের এই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে ছোট্ট ম্যাটি, এবং পরবর্তীতে তার লিভার প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়।
ম্যাটির মা অ্যালিসন বিচাম জানান, “তখন যেন আমাদের জীবনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো।
একদিকে যেমন ছিল উদ্বেগ, তেমনই ছিল লড়াইয়ের মানসিকতা।”
তিনি আরও বলেন, “নার্সরা সবসময় আমাদের পাশে ছিলেন। তারা শুধু ম্যাটির যত্নই নেননি, আমাদের মানসিকSupport ও জুগিয়েছেন।”
চিকিৎসকরা যখন ম্যাটির বাঁচার সম্ভাবনা প্রায় দেখেননি, সেই সময়ও হাল ছাড়েননি নার্সরা।
তারা দিনরাত এক করে ম্যাটিকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। এমনকি, জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন এবং পরীক্ষামূলক চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করতেও পিছপা হননি তারা।
নার্স আমান্ডা হেলনারের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে ম্যাটির চিকিৎসা করা হয়, যা আগে খুব কম ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়েছে।
এই ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি ম্যাটির জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ম্যাটির সুস্থ হয়ে ওঠার পর, তার মা-বাবা নার্সদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, “এই নার্সরাই আমাদের পরিবারের অংশ হয়ে গিয়েছেন।”
ম্যাটির দ্বিতীয় জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও তারা উপস্থিত ছিলেন, যা ছিল তাদের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
বর্তমানে ম্যাটি দুই বছর বয়সী এক হাসিখুশি শিশু।
তার মা জানান, ম্যাটি এখন সবার সঙ্গে হাসিমুখে মিশে যায়, ভালোবাসে জড়িয়ে ধরতে।
ম্যাটির মা-বাবার ভাষায়, নার্সদের এই ত্যাগ ও ভালোবাসার কারণেই আজ ম্যাটি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে।
তাদের মতে, নার্সদের এই উৎসর্গীকৃত মনোভাব তাদের জীবনকে নতুন করে উপলব্ধি করতে শিখিয়েছে।
এই ঘটনা স্বাস্থ্যকর্মীদের একাগ্রতা ও মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: পিপল