শিরোনাম: জীবনের পড়ন্ত বেলায় মাতৃত্ব: এক নারীর অভিজ্ঞতা ও অন্যদের প্রতি আহ্বান
বর্তমান সমাজে, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে, একটি নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যে বিয়ে ও সন্তান ধারণের প্রবণতা দেখা যায়। এই ধারণা অনেকের মনে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করে, যেন সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে।
তবে, এই ধারণার বিপরীতে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন ৭০ বছর বয়সী আমেরিকান নারী, যিনি জীবনের অনেকটা সময় পেরিয়ে মা হয়েছেন এবং অন্যদেরও এই পথে উৎসাহিত করছেন।
লিবি গ্রিনস্টোন নামের এই নারীর প্রথম সন্তান হয় ৩৭ বছর বয়সে, আর দ্বিতীয় সন্তান জন্ম নেয় ৪২ বছর বয়সে। তিনি টিকটকে একটি ভিডিওর মাধ্যমে এই বিষয়ে তাঁর মতামত তুলে ধরেন, যা দ্রুত ভাইরাল হয়।
ভিডিওটিতে তিনি জানান, জীবনের এই সময়ে মা হওয়ার কোনো তাড়াহুড়ো নেই। বরং, ত্রিশের কোঠায় পা রাখা নারীদের জন্য এটি একটি সুন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ সময় হতে পারে।
লিবি মনে করেন, দেরিতে সন্তান ধারণের ফলে তিনি নিজের জীবনকে ভালোভাবে উপভোগ করতে পেরেছেন। নিজের ক্যারিয়ারে স্থিতিশীলতা এনেছেন এবং ব্যক্তিগত জীবনেও পরিণত হয়েছেন।
তাঁর মতে, “ত্রিশের দশকে মা হলে, নিজের এবং সঙ্গীর জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। এর ফলে সন্তানদের সঙ্গে জ্ঞান, ভালোবাসা এবং জীবনের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার মতো মানসিক প্রস্তুতি তৈরি হয়।”
তিনি আরও বলেন, সন্তান জন্ম দেওয়া কোনো ত্যাগের বিষয় নয়, বরং এটি একটি গভীরinfulfilling বিনিয়োগ।
লিবি তাঁর সন্তানদের সঙ্গে কাটানো সময়গুলো বিশেষভাবে উপভোগ করেন। তাঁর মতে, পরিবারের প্রতি মনোযোগ এবং একসঙ্গে সময় কাটানো তাঁর সন্তানদের সঙ্গে দৃঢ় বন্ধন তৈরি করেছে।
লিবি’র মেয়ে, ২৮ বছর বয়সী কেটি গ্রিনস্টোন, মায়ের এই পরামর্শে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার মা যখন তাঁর এই জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন, তখন মনে হয় যেন আমার জন্য সময়োপযোগী কিছু শোনালেন।
কারণ, আমি যখন আমার ত্রিশের কোঠায় পা রাখতে যাচ্ছি, তখন বিয়ে এবং সন্তান ধারণ নিয়ে আমার মনেও অনেক প্রশ্ন রয়েছে।”
কেটি আরও যোগ করেন, তাঁর মায়ের এই ভাবনা অনেক নারীর কাছেই স্বস্তি এনেছে, বিশেষ করে তাঁদের জন্য, যাঁরা সমাজের প্রচলিত ধারণার কারণে নিজেদের পিছিয়ে পড়া মনে করেন।
এই ভিডিও মা ও মেয়ের মধ্যেকার কথোপকথন থেকে অনেক বেশি কিছু ছিল—এটি ছিল নারীদের প্রতি সমাজের চাপ এবং সময়সীমা ছাড়াই জীবনকে উপভোগ করার স্বাধীনতা নিয়ে একটি আলোচনা।
এই ভিডিও প্রমাণ করে, নারীদের জীবন এবং পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে সমাজে এখনো অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে।
এই ধরনের আলোচনা, এই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা মানুষকে নতুন করে ভাবতে শেখায়। লিবি গ্রিনস্টোনের এই অভিজ্ঞতা, সমাজে প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে নারীদের জন্য একটি ভিন্ন পথের সন্ধান দেয়, যা তাঁদের জীবনকে আরও সুন্দর ও পরিপূর্ণ করে তুলতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল