বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী বেওন্সে এবং সোলাঞ্জের মা, টিনা নোলস, সম্প্রতি তাঁর নতুন আত্মজীবনী ‘ম্যাট্রিয়ার্ক’-এর প্রচারের জন্য এসেছিলেন। এই বইটিতে তিনি তাঁর জীবনের নানা অভিজ্ঞতা এবং সন্তানদের মানুষ করার ক্ষেত্রে নেওয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেছেন।
নিউইয়র্কের সিএনএন অফিসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের শৈশব, সন্তানদের প্রতিপালন এবং জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিয়ে কথা বলেন।
টিনা নোলসের জন্ম হয় আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের গ্যালেভস্টনে। তাঁর বেড়ে ওঠার সময় সেখানে শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে বিভেদ ছিল।
সেই সময়ে, সমাজের চোখে মেয়েদের চুপচাপ থাকতে হতো এবং নিজেদের বেশি প্রকাশ করতে দেওয়া হতো না। টিনা নোলস জানিয়েছেন, ছোটবেলায় তাঁকে সবসময় চুপ থাকতে বলা হতো।
কিন্তু তাঁর মধ্যে ছিল প্রবল ইচ্ছাশক্তি। তাই তিনি চুপ করে থাকতে পারেননি। তাঁর এই স্বভাবের কারণে বন্ধুদের কাছে তিনি ‘ব্যাডাস টেনি বি’ নামে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে জানা যায়, তাঁর এই অস্থিরতার কারণ ছিল এডিএইচডি (অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারএকটিভিটি ডিসঅর্ডার)।
ছোটবেলার সেই কঠিন দিনগুলোর কথা বলতে গিয়ে টিনা নোলস জানান, শিশুদের প্রতি মা-বাবার কথা ও আচরণের গভীর প্রভাব ফেলে। তাই তিনি তাঁর সন্তানদের এমনভাবে বড় করেছেন, যাতে তারা নিজেদের সীমাবদ্ধ না ভাবে।
বেওন্সে এবং সোলাঞ্জের মধ্যে যখন ছোটখাটো বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হতো, তখন তিনি তাদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করেন। তাঁর মতে, ভাই-বোনের সম্পর্ক ভালো রাখতে অভিভাবকদের সচেতন থাকা প্রয়োজন।
নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে টিনা নোলস নারীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কেও সচেতন হতে বলেছেন। স্তন ক্যানসার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, মহিলারা প্রায়ই অন্যদের কথা ভাবতে গিয়ে নিজের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেন না।
তাঁর মতে, প্রত্যেক নারীর উচিত নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো।
টিনা নোলস মনে করেন, মা হিসেবে নিজের যত্ন নেওয়াটাও খুব জরুরি। কারণ, শিশুরা তাঁদের বাবা-মাকে দেখে শেখে।
তাঁর মা তাঁর সন্তানদের জন্য সুন্দর পোশাক তৈরি করতেন। এমনকি দরিদ্র পরিবার হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা সবসময় ভালো পোশাক পরতেন।
টিনা নোলস তাঁর মেয়েদের ফ্যাশন সম্পর্কে ভালো ধারণা দিয়েছেন এবং পোশাকের ডিজাইন সম্পর্কেও শিখিয়েছেন।
টিনা নোলসের এই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে মা হিসেবে তাঁর সংগ্রামের কথা, যা আমাদের সমাজের মায়েদের জন্য শিক্ষণীয়। সন্তানদের সঠিক পথে পরিচালিত করতে এবং নিজেদের সুস্থ রাখতে তাঁর পরামর্শগুলো খুবই মূল্যবান।
তথ্যসূত্র: সিএনএন