প্রসব যন্ত্রণা! ওয়ালমার্টে বিপাকে মা, কর্মীদের কাণ্ডে বিস্মিত সবাই

টেক্সাসের একটি দোকানে কেনাকাটা করতে গিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে সন্তান প্রসব করেন এক নারী। এরপর সেখানে উপস্থিত কর্মীদের তৎপরতা এবং পরবর্তীতে তাদেরই উদ্যোগে আয়োজিত এক আনন্দ-অনুষ্ঠানে অভিভূত হন তিনি। ঘটনাটি মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের গ্যালভেস্টন শহরে বসবাসকারী সেরেনা মানসেরা নামের এক নারী, যিনি গর্ভবতী ছিলেন, ১৩ই মার্চ পরিবারের সাথে স্থানীয় একটি ওয়ালমার্ট-এ কেনাকাটা করতে যান। তিনি যখন দোকানে ছিলেন, তখন হঠাৎ করেই তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। সেরেনার প্লাসেন্টা প্রিভিয়া নামক একটি জটিলতা ছিল, যার কারণে চিকিৎসকেরা তাকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন পরিবারের সাথে সমুদ্রের তীরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার।

হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে ঘাবড়ে গেলেও, সেখানকার কর্মীদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। দোকানের কয়েকজন কর্মী এবং সেখানে উপস্থিত একজন নার্স দ্রুত এগিয়ে আসেন এবং সেরেনাকে সাহায্য করেন। অ্যাম্বুলেন্স আসার আগ পর্যন্ত তারা সেরেনা ও তার পরিবারের পাশে ছিলেন। এরপর সেরেনাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি একটি ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের সময় শিশুটির ওজন ছিল প্রায় ১.৯ কেজি (৪ পাউন্ড ২ আউন্স)।

সময়ের আগেই জন্ম হওয়ায় শিশুটিকে প্রায় পাঁচ সপ্তাহ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র – NICU) থাকতে হয়েছিল।

হাসপাতাল থেকে ফেরার পর সেরেনা এবং তার পরিবারকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য ওয়ালমার্ট কর্তৃপক্ষ এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করে। ঘটনার কয়েক দিন পর, তারা সেরেনাকে দোকানে আমন্ত্রণ জানায়। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, তার জন্য একটি অপ্রত্যাশিত বেবি শাওয়ারের আয়োজন করা হয়েছে। দোকানের কর্মীরা মিলে এই আয়োজন করেন, যেখানে নবজাতকের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্রও ছিল।

সেরেনা জানান, এই অপ্রত্যাশিত ভালোবাসায় তিনি খুবই আনন্দিত এবং অভিভূত।

সেরেনার স্বামী জুয়ান বলেন, কর্মীদের এই ধরনের সাহায্য ছিল সত্যিই অসাধারণ। তারা শুধু সেরেনাকে সাহায্যই করেননি, বরং অ্যাম্বুলেন্স কল করা থেকে শুরু করে সবকিছুতেই সহযোগিতা করেছেন।

তিনি আরও জানান, এই ঘটনার পর তাদের পরিবার যেন আরও কাছে এসেছে। মা হওয়ার এই বিশেষ অভিজ্ঞতা, অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকায়, সেরেনা তার সন্তানের জন্মের গল্পটি সারা জীবন মনে রাখবেন এবং অন্যদের সাথেও শেয়ার করতে চান।

এই ঘটনা প্রমাণ করে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মানুষের মধ্যে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখা যায়।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *