যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির একটি প্রধান বিমানবন্দরে আসন্ন ফ্লাইট কমানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেখানকার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ রাডার বিভ্রাট এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের (বিমান ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক) অভাবের কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
এর ফলে বিশেষ করে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন সচিব শন ডাফি জানিয়েছেন, নিউয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে উড়োজাহাজ চলাচল সীমিত করা হবে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বিবেচনা করে ফ্লাইট সংখ্যা নির্ধারণ করবে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলির আগমনকালে, বিশেষ করে বিকালে, এই সীমাবদ্ধতা আরও কঠোর হতে পারে।
মূলত বিমানবন্দরটিতে আসা-যাওয়ার ফ্লাইটগুলির সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহে নিউয়ার্ক বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিলম্ব এবং বাতিলের সংখ্যা বেড়েছে।
ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এর তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
এছাড়া, সকালে যেখানে গড় বিলম্ব ছিল ৫ মিনিট, সন্ধ্যায় তা বেড়ে ১৬ মিনিটে দাঁড়িয়েছে।
সাধারণত, প্রতিটি ফ্লাইটের গড় বিলম্বের সময় ৮৫ থেকে ১৩৭ মিনিটের মধ্যে ছিল।
বিমান চলাচল ব্যবস্থাপনার এই সমস্যা সমাধানে ট্রাম্প প্রশাসন একটি বড় পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
এর অংশ হিসেবে, আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে নতুন ছয়টি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল সেন্টার তৈরি করা হবে এবং দেশের সমস্ত এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ করা হবে।
এই খাতে কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে।
অন্যদিকে, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের সংকট মোকাবিলায় ডাফি তাদের অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর কথা ভাবছেন।
বর্তমানে, এই বিভাগের কর্মীদের ৫৬ বছর বয়সে অবসর নিতে হয়।
ডাফি এই বয়সসীমা বাড়িয়ে ৬১ বছর করার পরিকল্পনা করছেন।
এছাড়া, কর্মীদের ধরে রাখতে তিনি বিশেষ বোনাস দেওয়ারও চিন্তা করছেন।
যদিও অনেক অভিজ্ঞ কন্ট্রোলার ২৫ বছর চাকরি করার পরেই অবসর নিতে পছন্দ করেন, যার ফলে প্রায়ই কর্মীর অভাব দেখা যায়।
পরিবহন সচিব শন ডাফি জানিয়েছেন, এই সমস্যাগুলো রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়।
তবে, নতুন কর্মী নিয়োগ এবং অভিজ্ঞ কর্মীদের ধরে রাখার মাধ্যমে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা যাবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী যাত্রী, বিশেষ করে যারা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করেন, তাদের ভ্রমণের সময় কিছু পরিবর্তন হতে পারে।
তবে কর্তৃপক্ষের আশা, খুব দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং বিমানবন্দর আগের মতোই তার স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস