মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ছুটির দিনগুলোতে পরিবর্তন আনার ব্যাপারে আগ্রহী দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর অনুযায়ী, তিনি ‘ভেটেরান্স ডে’ বা ‘প্রবীণ দিবস’-এর পরিবর্তে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিজয় দিবস পালনের কথা ভাবছেন।
শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনীর আড়াইশোতম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একটি সামরিক কুচকাওয়াজ করারও পরিকল্পনা করছেন, যা তাঁর নিজের জন্মদিন ১৪ই জুনের সঙ্গেই মিলে যায়। একই দিনে ‘ফ্ল্যাগ ডে’ও পালন করা হয়, যেদিন আমেরিকান পতাকা গৃহীত হয়েছিল।
হোয়াইট হাউসে এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির আত্মসমর্পণের দিন ৮ই মে-কে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হোক। তবে, অনেকের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখনও শেষ হয়নি, কারণ মার্কিন সেনারা তখনো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিল।
১৯৪৫ সালের আগস্ট মাসে জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটেছিল।
ট্রাম্পের মতে, এই দিনগুলো উদযাপন করা জরুরি। তবে, তিনি মনে করেন, বর্তমানে আমেরিকায় অনেক বেশি ছুটির দিন রয়েছে। তাঁর এমন মনোভাব রাশিয়ার বিজয় দিবসের কথা মনে করিয়ে দেয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯১৯ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন প্রথম ‘আর্মিস্টিস ডে’ পালন করেন, যা পরবর্তীতে ‘ভেটেরান্স ডে’-তে পরিণত হয়।
উইলসন যুদ্ধ শেষ হওয়ার এক বছর পর বলেছিলেন, এই দিনটি তাঁদের জন্য গর্বের, যাঁরা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন।
পরবর্তীতে, ১৯২৩ সালে, অসুস্থ উইলসন এক ভাষণে আমেরিকার জনগণকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক থেকে দূরে থাকার জন্য সমালোচনা করেছিলেন।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রতিষ্ঠিত অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার ‘আর্মিস্টিস ডে’-কে ‘ভেটেরান্স ডে’ হিসেবে ঘোষণা করেন।
আইজেনহাওয়ারের ভাষায়, এই দিনটি ছিল তাঁদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানো, যারা দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যুদ্ধ করেছেন। তিনি সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্সের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বিদায়ী ভাষণ দিয়েছিলেন, যা ট্রাম্পের সামরিক কুচকাওয়াজের ধারণার সঙ্গে কিছুটা ভিন্নতা তৈরি করে।
ট্রাম্প প্রায়ই তাঁর বক্তব্যে আমেরিকার সামরিক সক্ষমতার কথা উল্লেখ করেন এবং একে উদযাপনের কথা বলেন।