সাঁতার কাটার কঠিন যাত্রা! যেভাবে সহজ হলো…

সাঁতার কাটার শখ আছে? কিন্তু কি করে শুরু করবেন, সেই নিয়ে দ্বিধা? অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত শরীরচর্চার অংশ হিসেবে সাঁতার কাটার কথা ভাবেন, কিন্তু শুরু করতে পারেন না নানা কারণে।

গরমের এই সময়ে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে এবং একইসঙ্গে সুস্থ থাকতে সাঁতার হতে পারে দারুণ একটি উপায়। যারা দৌড়ানো বা অন্য কোনো ভারী শরীরচর্চা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না, তাদের জন্য সাঁতার একটি চমৎকার বিকল্প।

তাহলে চলুন, আজ জেনে নেওয়া যাক কীভাবে সাঁতার শুরু করা যেতে পারে এবং এর উপকারিতাগুলো কী কী।

সাঁতার শুরু করার প্রথম ধাপ হলো একটি ভালো পরিকল্পনা তৈরি করা। সাঁতারের প্রশিক্ষক রাজ সিং-এর মতে, সাঁতার শুরু করার আগে কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত।

শুরুতে, সাঁতারের সময় এবং দূরত্ব ঠিক করুন। উদাহরণস্বরূপ, সাঁতার শুরু করার সময় ৩০ মিনিটে ৬০০ মিটার সাঁতার কাটার লক্ষ্য নিতে পারেন।

সাঁতারের শুরুতে ধীরে ধীরে ওয়ার্ম আপ করুন, এবং শেষে কুল ডাউন করুন।

সাঁতার শেখার জন্য সঠিক কৌশল জানা খুবই জরুরি। সাঁতারের বিভিন্ন কৌশল রয়েছে, যেমন – ফ্রন্ট ক্রল, ব্যাকস্ট্রোক, ব্রেস্ট স্ট্রোক এবং বাটারফ্লাই।

ফ্রন্ট ক্রল সাঁতার দ্রুততা এবং শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। সাঁতারের সময় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা এবং শরীরের সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

সাঁতারের প্রাথমিক পর্যায়ে একজন প্রশিক্ষকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে, যা সঠিক কৌশল শিখতে সাহায্য করবে।

সাঁতারের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করাও জরুরি। বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে সুইমিং পুল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে।

ঢাকার ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী সহ বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক সুইমিং পুলগুলোতে সাঁতার কাটার সুযোগ আছে। সাঁতারের ক্লাস ও প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে আপনি সাঁতারের সঠিক নিয়ম ও কৌশল সম্পর্কে জানতে পারবেন।

সাঁতার কাটার আগে নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং লাইফগার্ডের উপস্থিতি নিশ্চিত করা জরুরি।

সাঁতার শুরু করার সময় কিছু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দরকার হয়। সাঁতারের পোশাক, সাঁতারের টুপি, এবং সাঁতারের চশমা প্রাথমিক সরঞ্জামগুলির মধ্যে অন্যতম।

সাঁতারে অভ্যস্ত হওয়ার পরে, আপনি সাঁতারের আরও উন্নত সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারেন, যেমন – ফ্লিপার বা হ্যান্ড প্যাডেল।

সাঁতার শুরু করার পর নিয়মিত অনুশীলন করা প্রয়োজন। সাঁতারের কোচ ব্রেন্টন ফোর্ড-এর মতে, সাঁতারুদের জন্য প্রতি সপ্তাহে ধীরে ধীরে সাঁতারের সময় এবং দূরত্ব বাড়ানো উচিত।

সাঁতারকে উপভোগ্য করে তুলতে বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সাথে সাঁতার কাটতে পারেন। সাঁতার ক্লাবগুলোতে যুক্ত হয়ে আপনি অন্যদের সঙ্গে সাঁতার কাটার সুযোগ পেতে পারেন, যা আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে এবং সাঁতারের প্রতি আগ্রহ বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

সাঁতার একটি চমৎকার শরীরচর্চা, যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। নিয়মিত সাঁতার কাটার মাধ্যমে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

এটি পেশী সুগঠিত করে এবং শরীরের নমনীয়তা বাড়ায়। সাঁতার মানসিক চাপ কমাতে এবং মনকে শান্ত করতে সহায়ক।

সুতরাং, সাঁতার শুরু করতে দ্বিধা বোধ না করে, আজই পরিকল্পনা করুন এবং নেমে পড়ুন জলে! সাঁতার আপনার শরীর ও মনের জন্য এক দারুণ উপহার হতে পারে।

তথ্যসূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *