মার্কিন-চীন শুল্ক আলোচনা: ট্রাম্পের ‘বিশাল অগ্রগতি’!

চীন-যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আলোচনা: অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা, ট্রাম্পের ‘বড় অগ্রগতির’ ইঙ্গিত।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিকে অস্থির করে তোলা এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি, তবে উভয় পক্ষই তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে।

আলোচনার দ্বিতীয় দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, “আমরা দারুণ উন্নতি করছি।” এমনকি তিনি “পুরোপুরি নতুন করে সবকিছু শুরু” করারও ইঙ্গিত দেন। অন্যদিকে, বেইজিং সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

তারা বলেছে, চীন এমন কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করবে না যা দেশের মূলনীতিগুলোর সঙ্গে আপস করে বা বিশ্ব অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

আলোচনা এখনো পর্যন্ত গোপন রাখা হয়েছে এবং শনিবার বৈঠকের পর কোনো পক্ষই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেনি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তার সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকালে আলোচনা পুনরায় শুরু হয়।

এই আলোচনা বিশ্ববাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সহায়ক হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক-সংক্রান্ত বিরোধের কারণে পণ্য বোঝাই জাহাজগুলো বন্দরেই আটকা পড়ে আছে। শুল্কের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তারা পণ্য খালাস করতে পারছে না।

জানা যায়, গত মাসে ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেন, যা সম্মিলিতভাবে ১৪৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় চীনও মার্কিন পণ্য আমদানির ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এত উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ কার্যত উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বন্ধের শামিল, যা গত বছর ৬৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ছিল।

আলোচনার আগে ট্রাম্প শুক্রবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর শুল্ক কমাতে পারে। তিনি এক পোস্টে লেখেন, “৮০% শুল্ক সম্ভবত সঠিক! স্কটের (ট্রেজারি সেক্রেটারি) উপর নির্ভর করছে।”

এই আলোচনা উভয় পক্ষের মধ্যে সরাসরি আলোচনার প্রথম সুযোগ। যদিও কোনো সাফল্যের সম্ভাবনা কম, তারপরও শুল্ক সামান্য কমালে, বিশেষ করে যদি তা যুগপৎভাবে করা হয়, তবে কিছুটা হলেও আস্থা ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপনসিবল স্টেটক্রাফটের পূর্ব এশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক জ্যাক ওয়ার্নার এক ইমেইলে জানান, “যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা কমাতে আলোচনা খুবই জরুরি এবং উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার সূচনা হওয়াটা ইতিবাচক।”

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চীন সরকার ফেন্টানাইল নামক মাদক পাচার বন্ধে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প চীনের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এছাড়া, অতীতের কিছু শুল্কের কারণে কিছু চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্কের পরিমাণ ১৪৫ শতাংশের বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতিও ট্রাম্পের উদ্বেগের কারণ।

গত বছর এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *