গাজায় বন্দী মার্কিন-ইসরায়েলি নাগরিককে মুক্তি দেবে হামাস, চলছে যুদ্ধবিরতির আলোচনা।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বন্দী একজন মার্কিন-ইসরায়েলি নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকরের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা চলছে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।
রবিবার হামাসের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে মার্কিন নাগরিকত্ব রয়েছে এমন ইসরায়েলি সেনা ইদান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়া হবে।” বিবৃতিতে ইদান আলেকজান্ডারকে কবে মুক্তি দেওয়া হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
এদিকে, ইসরায়েলি গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন দূত স্টিভ উইটকোফ সোমবার ইসরায়েলে যাবেন। ধারণা করা হচ্ছে, এটিও এই চুক্তির একটি অংশ। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উইটকোফ বেশ কয়েকবার ইদান আলেকজান্ডারের নাম উল্লেখ করেছেন।
রবিবার হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, তারা অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চায়। একইসঙ্গে গাজায় একটি স্বাধীন ও প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ প্রশাসন ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারেও তারা আগ্রহী। হামাস আরও জানায়, এমনটা হলে “দীর্ঘ বছর ধরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে, সেই সঙ্গে পুনর্গঠন এবং অবরোধের অবসান হবে।”
তবে, যুক্তরাষ্ট্র অথবা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ইদান আলেকজান্ডার, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস-এর নেতৃত্বাধীন এক হামলায় ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটি থেকে অপহৃত হয়েছিলেন।
এর আগে, রবিবার হামাসের দুইজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং এতে “অগ্রগতি” হয়েছে। হামাসের ওই কর্মকর্তাদের একজন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় গাজায় ত্রাণ প্রবেশ এবং ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি বিনিময়ের বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। অপর একজন কর্মকর্তা গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়েও অগ্রগতির কথা জানান।
গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল দুই মাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ভেঙে দেয় এবং গাজায় নতুন করে অভিযান শুরু করে। একইসঙ্গে তারা গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ইসরায়েল জানায়, হামাসকে বন্দী মুক্তির জন্য চাপ দিতেই তারা এমনটা করেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।
ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজাজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। এমনকি ইসরায়েলি সরকার গাজায় তাদের অভিযান আরও প্রসারিত করার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলেও জানা গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের অভিযান পুনরায় শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ২ হাজার ৭২০ জন নিহত হয়েছেন। সবমিলিয়ে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৮২৯ জনে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা