মা’কে নিয়ে ভ্রমণে তরুণীর নস্টালজিক যাত্রা, ক্যামেরাবন্দী হলো দারুণ মুহূর্ত!

মা ও মেয়ের ভালোবাসার এক অসাধারণ গল্প: মায়ের পুরোনো ছবি অনুসরণ করে মেয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ভ্রমণ।

ব্রিটিশ ফটোগ্রাফার রোজী লাগ তার মায়ের, হেইলি চ্যাম্পিয়নের, পুরনো কিছু ভ্রমণের ছবি অনুসরণ করে সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ঘুরে এসেছেন।

নব্বইয়ের দশকে হেইলি থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় কাটানো সময়গুলোর ছবি তুলেছিলেন।

রোজী সেই ছবিগুলো নতুন করে ক্যামেরাবন্দী করেছেন, মায়ের মতোই একই স্থানে দাঁড়িয়ে, একই ভঙ্গিতে।

মা ও মেয়ের মধ্যেকার সম্পর্ক আরও গভীর করতেই যেন এই ভিন্নধর্মী উদ্যোগ।

রোজী জানান, তার মা-ই তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু।

তারা প্রায় সবসময় একসঙ্গে সময় কাটান।

রোজীর যখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ভ্রমণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়, তখন মা হেইলি তার পুরনো দিনের স্মৃতিগুলো মেয়ের সঙ্গে ভাগ করেন।

হেইলি জানান, তার কিছু ছবি রয়েছে, যা তিনি নব্বইয়ের দশকে তুলেছিলেন।

সেই ছবিগুলো দেখেই রোজীর মনে হয়, মায়ের সেই সময়ের ছবিগুলোর আদলে যদি কিছু ছবি তোলা যায়, তাহলে কেমন হয়!

মায়ের পুরোনো ছবিগুলো খুঁজতে গিয়ে রোজী একটি সাদা-কালো ছবি তোলার ক্যামেরা খুঁজে পান, যা ছিল ‘অলিম্পাস এমজু’ মডেলের।

১৯৯১ সালে প্রথম বাজারে আসা এই ক্যামেরাটি একসময় খুবই জনপ্রিয় ছিল।

মায়ের তোলা ছবিগুলো দেখতে দেখতে রোজী মুগ্ধ হয়ে যান।

ছবিতে মায়ের হাসি, খাবার খাওয়ার দৃশ্য, বাজারের আনাগোনা, সমুদ্রের তীরে হাঁটা—সবকিছুই যেন রোজীকে তার মায়ের কৈশোরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

ছবিগুলো দেখতে দেখতে রোজী ও হেইলি দুজনেই তাদের মধ্যেকার মিল খুঁজে পান।

তাদের মুখের আদল এতটাই মিলে যায় যে, ছবিগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই কোনটি মায়ের, আর কোনটি মেয়ের।

রোজী বলেন, “আমার মনে হচ্ছিল যেন আমি নিজেরই ছবি দেখছি।”

এরপরই তিনি মায়ের পুরোনো ছবিগুলোর আদলে কিছু ছবি তোলার পরিকল্পনা করেন।

এই ভ্রমণের জন্য রোজী তার মায়ের পুরোনো ক্যামেরাটি সঙ্গে নিয়ে যান।

ছবি তোলার জন্য তিনি কোনো নির্দিষ্ট স্থান নির্বাচন করেননি, বরং মায়ের ছবির মতো দৃশ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন।

যেমন, মায়ের একটি ছবিতে দেখা যায়, তিনি একটি সমুদ্র সৈকতে হেঁটে যাচ্ছেন।

রোজী ইন্দোনেশিয়ার একটি সৈকতে গিয়ে একই ধরনের একটি দৃশ্য খুঁজে পান এবং মায়ের মতোই হেঁটে যাওয়ার একটি ছবি তোলেন।

পুরোনো ফিল্ম ক্যামেরার সীমাবদ্ধতা ছিল, কারণ ছবি তোলার সঙ্গে সঙ্গেই তা দেখার সুযোগ ছিল না।

ছবিগুলো প্রিন্ট হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হতো।

রোজী বলেন, “এই অপেক্ষার মধ্যে একটা অন্যরকম আনন্দ ছিল।”

ভ্রমণ শেষে ছবিগুলো যখন হাতে পান, তখন তিনি খুবই খুশি হন।

ছবিগুলো দেখে মা হেইলিও খুব আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

মা ও মেয়ের এই ছবিগুলো যেন তাদের ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

রোজী বলেন, “এই ছবিগুলো তোলার মাধ্যমে মায়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে।

মায়ের স্মৃতিগুলো নতুন করে ধারণ করতে পারাটা ছিল অসাধারণ এক অনুভূতি।”

বর্তমানে রোজী যুক্তরাজ্যে ফিরে এসেছেন।

তিনি তার তোলা ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতে এই ছবিগুলো দিয়ে একটি প্রদর্শনী করার পরিকল্পনা করছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *