ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলা: উত্তেজনা বাড়ছে, বাড়ছে মানবিক সংকট
মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা যেন থামছেই না। গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর ওপর ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা হামলা চালাচ্ছে। এর পাল্টা জবাব হিসেবে এবার ইয়েমেনে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তবে এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির খবর পাওয়া গেলেও তা এখনো নিশ্চিত নয়।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় ইয়েমেনের রাজধানী সানার বিমানবন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর হুদাইদার বেসামরিক স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে সেখানে মানবিক সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, বর্তমানে ইয়েমেনের ১ কোটি ৮০ লক্ষাধিক মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। খাদ্য সংকটে ভুগছে ১ কোটি ৭০ লক্ষাধিক মানুষ, যাদের মধ্যে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ অনাহারের দ্বারপ্রান্তে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তাঁর প্রশাসনের সঙ্গে হুতি বিদ্রোহীদের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। যদিও হুতি বিদ্রোহীরা এখনও পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের আক্রমণ বন্ধের কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। বরং তারা জানিয়েছে, গাজায় ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের ওপর হামলা অব্যাহত থাকবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই হামলাগুলো হুতি বিদ্রোহীদের দমনের উদ্দেশ্যে চালানো হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এর ফল উল্টো হতে পারে। কারণ, হুতি বিদ্রোহীরা গত এক দশক ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে আছে। তাদের সামরিক সক্ষমতা হয়তো ইসরায়েলের চেয়ে কম, তবে তারা সহজে হার মানার পাত্র নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের এই হামলাগুলো কেবল প্রতিশোধের অংশ। এর মূল লক্ষ্য বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করা এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তোলা। তাঁদের মতে, ইসরায়েলের হামলাগুলো ইয়েমেনের জনগণের জন্য আরও বেশি দুর্ভোগ বয়ে আনবে।
বর্তমানে, ইসরায়েল এবং হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে এই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের ধারা অব্যাহত থাকলে ইয়েমেনের মানবিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনা না গেলে এই অঞ্চলে উত্তেজনা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।