আন্তর্জাতিক বাণিজ্য থেকে শুরু করে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিমানবন্দরের সমস্যা, এবং অপ্রত্যাশিত উপহার—গতকালের উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনার একটি সারসংক্ষেপ নিচে তুলে ধরা হলো।
**চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ: আপাতত বিরতি**
বিশ্বের বৃহত্তম দুটি অর্থনীতি, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ সম্ভবত কিছুদিনের জন্য শান্ত হতে চলেছে।
জানা গেছে, দুই দেশই পরস্পরের পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর ব্যাপারে রাজি হয়েছে।
এই চুক্তির ফলে, আগামী ৯০ দিনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে, যেখানে চীন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক ১০ শতাংশে কমাবে।
এপ্রিল মাস থেকে শুরু হওয়া শুল্কের এই লড়াইয়ের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়, ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিনিয়োগকারীরা তাদের পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হয়।
**তুরস্কে কুর্দি শ্রমিক পার্টির অস্ত্র সংবরণ**
দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশক ধরে তুরস্কের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতের পর কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, “গণতান্ত্রিক রাজনীতির মাধ্যমে কুর্দি সমস্যার সমাধান সম্ভব।”
১৯৭৮ সালে আবদুল্লাহ ওকালান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বে একটি স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছিল।
এই দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী সংঘাতে ৪০,০০০ এর বেশি মানুষের জীবনহানি হয়েছে।
১৯৯৯ সালে ওকালানকে বন্দী করা হয় এবং দেশদ্রোহিতার অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
**যুক্তরাষ্ট্রে ‘হ্যাবিয়াস কর্পাস’ স্থগিতের আলোচনা**
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘হ্যাবিয়াস কর্পাস’ (Habeas Corpus), যা আটকদের আদালতে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ দেয়, সেটি স্থগিত করার বিষয়ে হোয়াইট হাউস আলোচনা করছে।
মূলত, অভিবাসন বিষয়ক কিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে হ্যাবিয়াস কর্পাস স্থগিত করার সুযোগ কেবল বিদ্রোহ বা আক্রমণের মতো গুরুতর পরিস্থিতিতেই সীমাবদ্ধ।
**নিউয়ার্ক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত**
যুক্তরাষ্ট্রের নিউয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আবারও কারিগরি ত্রুটির কারণে ফ্লাইট চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
গত কয়েক সপ্তাহে বিমানবন্দরের বিভিন্ন কারিগরি ত্রুটির কারণে হাজার হাজার ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে বা বাতিল করতে হয়েছে।
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের (বিমান ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক) স্বল্পতা।
**কাতারের কাছ থেকে ট্রাম্পের জেট বিমান গ্রহণ: বিতর্ক**
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতার রাজপরিবারের কাছ থেকে একটি বিশাল আকারের জেট বিমান উপহার হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন।
এই ঘটনার জেরে নৈতিক ও আইনগত প্রশ্ন উঠেছে।
বিরোধীরা বলছেন, কোনো বিদেশি সরকারের কাছ থেকে এই ধরনের বিলাসবহুল বিমান গ্রহণ করা ঘুষের শামিল হতে পারে, বিশেষ করে যখন এটি ট্রাম্পের লাইব্রেরিতে দান করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যা তিনি ক্ষমতা ছাড়ার পরেও ব্যবহার করতে পারবেন।
সংবাদ সংস্থা সিএনএন-এর প্রতিবেদন অবলম্বনে।