প্রথম ভাষণে পোপের শান্তির বার্তা, বিশ্বজুড়ে আলোচনা!

পোপ লিও চতুর্দশ: সাংবাদিকদের মুক্তি ও শান্তির আহ্বান।

নতুন নির্বাচিত পোপ লিও চতুর্দশ তাঁর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুক্তি এবং শান্তির বার্তা দিয়েছেন। গত ৮ই মে পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর, সোমবার, ১২ই মে তিনি ভ্যাটিকানের পল ষষ্ঠ হলে ১০০০ এর বেশি সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন।

এই সময় তিনি সাংবাদিকদের স্বাধীনতা এবং শান্তির গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন।

পোপ লিও, সাংবাদিকদের প্রতি তাঁর ভাষণে বলেন, “আপনারা সংঘাত এবং শান্তির আকাঙ্ক্ষা, অবিচার ও দারিদ্র্যের চিত্র তুলে ধরেন, সেই সঙ্গে একটি সুন্দর বিশ্ব গড়তে নিরলস কাজ করা মানুষদের কথা জানান।

তাই আমি আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, সচেতনভাবে এবং সাহসের সঙ্গে শান্তির পক্ষে যোগাযোগের পথ বেছে নিন।

তিনি আরও বলেন, “আমরা কথার যুদ্ধ এবং ছবি ব্যবহারের বিরোধিতা করতে হবে, যুদ্ধের ধারণা ত্যাগ করতে হবে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “শুধুমাত্র সচেতন ব্যক্তিরাই স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

সাংবাদিকদের কাজকে তিনি বিশ্বের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করেন।

নতুন পোপ সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, “আমাদের প্রয়োজন শক্তিশালী, জোরালো যোগাযোগের পরিবর্তে এমন যোগাযোগ যা দুর্বল ও কণ্ঠহীন মানুষের কথা শোনার ক্ষমতা রাখে।

পোপ নির্বাচনের কয়েক দিন পরেই তাঁর কর্মব্যস্ততা শুরু হয়। রবিবার, ১১ই মে, তিনি সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার কেন্দ্রীয় লজিয়ায় ‘রেজিনা কয়েলি’ প্রার্থনা পরিচালনা করেন।

এই প্রার্থনা সাধারণত ইস্টার সানডে এবং পেন্টেকস্টের মধ্যে পাঠ করা হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার, ৯ই মে, পোপ নির্বাচিত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি সিস্টিন চ্যাপেলে প্রথম গণপ্রার্থনা করেন। বিবিসি সূত্রে জানা যায়, সেখানে ১৩০ জনের বেশি কার্ডিনাল উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সময় সকাল ১১টার কিছু পরে, পোপ লিও চ্যাপেলের বেদীতে চুম্বন করে প্রার্থনা শুরু করেন।

তিনি পুরো চ্যাপেলটি প্রদক্ষিণ করেন এবং উপাসকদের সঙ্গে প্রার্থনা করেন।

গণপ্রার্থনার সময় পোপ লিও কার্ডিনালদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং নিজেকে একজন “বিশ্বস্ত প্রশাসক” হিসেবে বর্ণনা করেন, যিনি এই বিশ্বের অন্ধকার দূর করতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, “আমি জানি, আপনারা সবাই যিশুর বন্ধু, বিশ্বাসী হিসেবে সুসংবাদ ঘোষণা করতে আমার সঙ্গে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন।

পরবর্তীতে, পোপ প্রযুক্তি, অর্থ, সাফল্য, ক্ষমতা বা আনন্দের প্রতি আকৃষ্ট স্থানগুলোতে মিশনারি কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

পোপ হিসেবে বিশ্বের উদ্দেশ্যে প্রথম ভাষণে তিনি তাঁর পেরুর চিকলায়োর ডায়োসিস, তাঁকে নির্বাচিত করা “ভাই কার্ডিনালগণ” এবং তাঁর পূর্বসূরি প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

পোপ ফ্রান্সিস দুই বছর আগে তাঁকে কার্ডিনাল হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন।

সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার কেন্দ্রীয় বারান্দা থেকে দেওয়া সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় পোপ লিও তাঁর প্রথম শব্দ হিসেবে “আপনাদের সবার শান্তি হোক” উচ্চারণ করেন এবং ঐক্য ও শান্তির ওপর গুরুত্ব দেন।

তিনি বলেন, “আমাদের একটি সিনডাল চার্চ হতে হবে।

এমন একটি চার্চ যা হেঁটে চলে। এমন একটি চার্চ যা সর্বদা শান্তি ও ভালোবাসার সন্ধান করে।

বিশেষ করে যারা কষ্ট ভোগ করছে, তাদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি থাকতে হবে।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *