১৫ বছর পর: মধ্যপ্রাচ্যে আসছে ডিজনি’র নতুন থিম পার্ক!

বিশ্বের বিনোদন জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে যাচ্ছে ডিজনি। আগামী ২০৩০ সালের প্রথম দিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের (United Arab Emirates) আবুধাবিতে (Abu Dhabi) তাদের নতুন থিম পার্ক ‘ডিসneyland Abu Dhabi’ তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছে ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি।

এই পদক্ষেপ তাদের বিগত ১৫ বছরে প্রথম নতুন রিসোর্ট তৈরির ঘটনা, যা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের প্রবেশকে আরও সুদৃঢ় করবে।

আবুধাবির ইয়াস দ্বীপে (Yas Island) অবস্থিত হতে যাওয়া এই পার্কটি হবে ডিসনির সপ্তম আন্তর্জাতিক গন্তব্য। বর্তমানে, ডিসনির পার্কগুলি তাদের আয়ের প্রধান উৎস, যা তাদের মোট পরিচালন আয়ের প্রায় ৫৯ শতাংশ।

এই মুহূর্তে, বিশ্বজুড়ে বিনোদন পার্কের বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। এমতাবস্থায়, নতুন এই থিম পার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আবুধাবির মীরল (Miral) কোম্পানি এই পার্কের নির্মাণ, উন্নয়ন এবং পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে। তবে, সৃজনশীল নকশা এবং পরিচালনাগত দিকগুলো দেখভাল করবে ডিজনি ইমাজিনিয়ার্স।

কর্তৃপক্ষের মতে, এই পার্কটি শুধু একটি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবেই পরিচিত হবে না, বরং এটি আবুধাবির সংস্কৃতি এবং ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি হিসেবে দর্শকদের কাছে পরিচিত হবে।

আবুধাবি ও দুবাই বিমানবন্দরের উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে, যেখানে তারা বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার সাথে সংযোগ স্থাপন করতে চায়। এর মধ্যে ভারতের ১৪০ কোটির বেশি মানুষও অন্তর্ভুক্ত, যারা সাংহাই বা হংকংয়ের ডিসনি পার্কের চেয়ে আবুধাবিতে সহজে ভ্রমণ করতে পারবে।

ধারণা করা হচ্ছে, এই অঞ্চলের প্রায় ৫০ কোটি মানুষের ডিসনি থিম পার্কে যাওয়ার সামর্থ্য রয়েছে।

ইতিমধ্যে, ইয়াস দ্বীপে সি ওয়ার্ল্ড, ওয়ার্নার ব্রোস ওয়ার্ল্ডের মতো আকর্ষণীয় স্থান তৈরি হয়েছে। এই অঞ্চলে পর্যটকদের আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে ডিসনির এই নতুন পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে, মধ্যপ্রাচ্যে থিম পার্কের ব্যবসায় সাফল্যের পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অতীতে দুবাইতে অতিরিক্ত বিনিয়োগের ফলে কিছু পার্ককে লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, আবুধাবিতে ইতিমধ্যে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটেছে, যা ডিসনির জন্য একটি সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করবে।

ডিসনি কর্তৃপক্ষের মতে, এই পার্কটি প্রযুক্তির দিক থেকেও অনেক উন্নত হবে। এখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দর্শকদের জন্য আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা তৈরি করা হবে।

উদাহরণস্বরূপ, চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত ‘আনরিয়েল ইঞ্জিন’-এর মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে থিম পার্কের আকর্ষণীয় দৃশ্য তৈরি করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে সাংহাই ডিসনি পার্কের উদ্বোধনের পর এই প্রথম নতুন কোনো থিম পার্ক নির্মাণের ঘোষণা দিল ডিজনি। একই সময়ে, ইউনিভার্সাল স্টুডিওসও যুক্তরাজ্যে তাদের সপ্তম রিসোর্ট তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছে।

ডিসনির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন এই পার্ক নির্মাণের ফলে তাদের আয়ের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে, ডিজনি তাদের বিভিন্ন ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।

বিশেষ করে, তাদের স্ট্রিমিং পরিষেবাগুলি, যেমন ডিজনি+ এবং হুলু-র গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে।

ডিজনির প্রধান নির্বাহী বব ইগার (Bob Iger) জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, মানুষের মধ্যে একটি বিশেষ ডিসনি থিম পার্কের অভিজ্ঞতা লাভের আগ্রহ এখনো রয়েছে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *