ইউক্রেন সংকট: ট্রাম্পের অবস্থানে আন্তর্জাতিক ঐক্যের প্রশ্নে উদ্বেগ।
গত কয়েকদিন ধরে ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে দৃশ্যমান হওয়া ঐক্যের ফাটল ধরিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধের জন্য ইউরোপ ও ইউক্রেনের পক্ষ থেকে যখন একটি প্রস্তাব আসে, তখন ট্রাম্পের ভিন্ন অবস্থান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ইউরোপীয় দেশগুলো এবং ইউক্রেন চেয়েছিল, রাশিয়া যেন ৩০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। তারা মনে করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেলে এই প্রস্তাব কার্যকর করা সহজ হবে।
এমনকি, ইউরোপীয় নেতারা দাবি করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের এই পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জুগিয়েছেন। সেই অনুযায়ী, রাশিয়ার প্রতি সোমবারের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু দৃশ্যপট দ্রুত পাল্টে যায়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন এবং এর পরিবর্তে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সরাসরি আলোচনা করার প্রস্তাব দেন।
এরপরই ট্রাম্প, ক্রেমলিনের এই প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানান। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দ্রুত আলোচনার টেবিলে বসার আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। কারণ, তারা ভেবেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেলে রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করা সহজ হবে।
কিন্তু ট্রাম্পের ভিন্ন অবস্থানের কারণে সেই ঐক্য দুর্বল হয়ে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের মূল কারণ হলো রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অটুট রাখা। ট্রাম্প সম্ভবত এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে চান না, যা রাশিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এদিকে, ইস্তাম্বুলে সম্ভাব্য বৈঠক নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। কারণ, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে গভীর মতবিরোধ রয়েছে।
তাঁদের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, ইউক্রেন সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো কি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারবে? নাকি ট্রাম্পের ভিন্ন নীতির কারণে এই সংকট আরও ঘনীভূত হবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেন সংকট দীর্ঘায়িত হলে বিশ্ব অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষ করে, জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হতে পারে, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন