আলোর জগৎকে হার মানিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ডার্ক স্কাই কাউন্টি!

**যুক্তরাষ্ট্রে ‘ডার্ক স্কাই’ স্বীকৃতি: নক্ষত্র ও পরিবেশের জন্য এক বিরাট জয়**

পশ্চিম আমেরিকার রাজ্য ওয়াইওমিং-এর একটি কাউন্টি, টেটন কাউন্টি, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছে। তারা বিশ্বের প্রথম ‘ইন্টারন্যাশনাল ডার্ক স্কাই কমিউনিটি’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

শুধু তাই নয়, এর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জ্যাকসন হোল বিমানবন্দর (জেএসি) ‘ইন্টারন্যাশনাল ডার্ক স্কাই প্লেস’ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করে, যা বিশ্বে প্রথম।

রাতের আকাশে আলো দূষণ কমিয়ে নক্ষত্র এবং প্রকৃতির সংরক্ষণে এই দুটি স্বীকৃতি এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

আলোর দূষণ হ্রাস করে রাতের আকাশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার এই ধারণাটি পরিবেশ সুরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

টেটন কাউন্টির লোকসংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম, জনবসতিও বিক্ষিপ্ত। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ এখনো অনেকখানি অক্ষুণ্ণ।

গ্র্যান্ড টিটন ন্যাশনাল পার্ক এবং ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের একটি অংশ এই কাউন্টির অন্তর্ভুক্ত।

এছাড়াও, এখানে রয়েছে বিশাল এলাকা জুড়ে সংরক্ষিত বনভূমি ও বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, যা রাতের আকাশকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

জ্যাকসন হোল বিমানবন্দরটি একটি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে অবস্থিত।

কর্তৃপক্ষের মতে, বিমানবন্দরের কর্মীরা এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন।

তাঁরা আলোর ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ করেছেন এবং বিশেষ প্রোগ্রাম তৈরি করেছেন, যাতে আলো দূষণ কম হয়।

এর ফলে শুধু রাতের আকাশ দেখাই সহজ হবে না, বরং গ্র্যান্ড টিটন পার্ক এবং আশেপাশের বন্যপ্রাণীও উপকৃত হবে, কারণ তারা রাতের স্বাভাবিক পরিবেশে ভালোভাবে বাঁচতে পারবে।

২০১৩ সাল থেকে ‘ওয়াইওমিং স্টারগেজিং’ নামক একটি সংস্থা এখানে জনসাধারণের জন্য নিয়মিত নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের কর্মসূচি শুরু করে।

তাদের এই উদ্যোগের ফলেই এখানকার মানুষজন রাতের আকাশের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে শুরু করে।

সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যামুয়েল সিঙ্গার বলেন, “নক্ষত্র যেন আমাদের ডিএনএ-তেই খোদাই করা আছে।

রাতের আকাশ যদি হারিয়ে যায়, তবে মানুষ হিসেবে আমাদের অনেক কিছুই হারানো হবে।”

টেটন কাউন্টি এবং জ্যাকসন হোল বিমানবন্দরের এই প্রচেষ্টা শুধু সেখানকার দর্শকদের জন্যই নয়, বরং সেখানকার সকল প্রাণীজগতের জন্যও উপকারী।

গ্র্যান্ড টিটন পার্কের তত্ত্বাবধায়ক চিপ জেনকিন্স বলেছেন, “ভবিষ্যতের প্রজন্ম যেন ওয়াইওমিংয়ের রাতের আকাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে আমাদের এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা।”

আলোর দূষণ বর্তমানে একটি বৈশ্বিক সমস্যা।

উন্নত দেশগুলোতে এর বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ছে।

আমাদের দেশেও, বিশেষ করে শহর অঞ্চলে, রাতের আকাশে আলোর দূষণ বাড়ছে।

ভবিষ্যতে এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের দেশেও নেওয়া যেতে পারে, যা পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের সুযোগ তৈরি করবে।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *