যুক্তরাজ্যে অভিবাসন নিয়ে কঠোর হচ্ছে শ্রম সরকার! কী আছে নতুন?

যুক্তরাজ্যে অভিবাসন আইন আরও কঠোর হচ্ছে, যা বিদেশি শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।

দেশটির লেবার সরকার সম্প্রতি অভিবাসন নীতিমালায় পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো বৈধ অভিবাসন কমানো এবং ডানপন্থী দলগুলোর ক্রমবর্ধমান সমর্থনকে প্রতিহত করা।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার, যিনি লেবার পার্টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন, এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তাঁর সরকার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে “চূড়ান্তভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা” করতে চায়।

তিনি বলেন অভিবাসন ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে, যেমন – কাজ, পরিবার এবং শিক্ষা – আরও কঠোর করা হবে। এর মাধ্যমে সরকারের মূল লক্ষ্য হলো অভিবাসনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা।

এই পরিবর্তনের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে রক্ষণশীল দলের শাসনের অবসানের পর অভিবাসনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া।

গত বছর পর্যন্ত কনজারভেটিভ সরকারের আমলে নেট অভিবাসন প্রায় ১০ লাখে পৌঁছেছিল।

লেবার পার্টি ঐতিহ্যগতভাবে অভিবাসন ইস্যুতে কিছুটা নমনীয় ছিল, তবে সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে অভিবাসন বিরোধী দল ‘রিফর্ম ইউকে’-র উত্থান তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে।

নতুন নীতিমালার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় সময়সীমা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে।

এছাড়া, নির্ভরশীল প্রাপ্তবয়স্কদের ইংরেজি ভাষার ওপর ভালো জ্ঞান থাকতে হবে এবং পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যে থাকার সময়ও কমানো হবে।

অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও নতুন ক্ষমতা তৈরি করা হচ্ছে।

সরকার জানিয়েছে, অভিবাসীরা ব্রিটেনের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে, তবে নিয়ন্ত্রণের অভাবে দেশটি “বিচ্ছিন্ন মানুষের দ্বীপে” পরিণত হতে পারে।

তাই ২০২৯ সালের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচনের আগেই অভিবাসনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

যদিও সরকার নির্দিষ্ট করে কত কমাতে চায়, সে বিষয়ে কোনো সংখ্যা জানায়নি।

উল্লেখ্য, গত বছর জুন মাস পর্যন্ত এক বছরে নেট অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ২৮ হাজার।

২০২৩ সালে এই সংখ্যা ৯ লাখ ৬ হাজারে পৌঁছেছিল।

যদিও এর আগে ২০১০-এর দশকে প্রতি বছর গড়ে ২ লাখ করে অভিবাসী আসত।

সম্প্রতি, নাইজেল ফারাগের নেতৃত্বাধীন ‘রিফর্ম পার্টি’ স্থানীয় নির্বাচনে বেশ কিছু আসনে জয়লাভ করেছে, যা লেবার পার্টির জন্য উদ্বেগের কারণ।

এই পরিবর্তনের ফলে যুক্তরাজ্যে বসবাস করতে যাওয়া বা সেখানে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য কিছু নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।

বিশেষ করে, দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে বসবাস করতে এবং নাগরিকত্ব পেতে আগের চেয়ে বেশি সময় লাগবে।

তাই, এই নতুন আইনগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *