শিল্পকলার ভবিষ্যৎ সংকটে? সরকারি অনুদান বন্ধের প্রতিক্রিয়া!

যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল সাহায্য হ্রাসের কারণে সংস্কৃতি জগৎ গভীর সংকটে পড়েছে। দেশটির সরকার পরিবর্তনের ফলে ন্যাশনাল এন্ডোমেন্ট ফর দ্য আর্টস (এনইএ) এবং ন্যাশনাল এন্ডোমেন্ট ফর দ্য হিউম্যানিটিজ (এনইএইচ)-এর মতো সংস্থাগুলোর অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বহু শিল্পী ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে লেখকদের সৃজনশীলতা, নাট্য প্রযোজনা, গবেষণা প্রকল্প এবং জাদুঘরের প্রদর্শনীগুলোর ওপর।

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকার, যারা জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফিরে আসে, তারা এনইএ, এনইএইচ, পিবিএস, কেনেডি সেন্টার এবং ইন্সটিটিউট ফর মিউজিয়াম এন্ড লাইব্রেরি সার্ভিসেস (আইএমএলএস)-এর মতো ফেডারেল সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে “ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধ”-কে দুর্বল করার জন্য “উগ্র এজেন্ডা” এগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এনেছে।

এর ফলস্বরূপ, সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং কর্মীদেরও ছাঁটাই করা হয়েছে। এর পরিবর্তে, সরকার জর্জ ওয়াশিংটন থেকে শুরু করে অভিনেত্রী শার্লি টেম্পল সহ “আমেরিকান বীরদের জাতীয় উদ্যান” তৈরি করার জন্য অর্থ বরাদ্দ করার ঘোষণা দিয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের কারণে, বিভিন্ন শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো তাদের পূর্বনির্ধারিত বাজেট অনুযায়ী অর্থ পেতে ব্যর্থ হচ্ছে। অনেক সাহিত্য পত্রিকা, যেমন ‘ইলেকট্রিক লিটারেচার’, ‘ম্যাকসুইনিস’ এবং ‘এন+১’-এর মতো প্রকাশনা সংস্থাগুলো তাদের অনুদান বাতিল হওয়ার খবর পেয়েছে।

ফিলাডেলফিয়ার রোজেনবাখ মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরি আইএমএলএস থেকে পাওয়া প্রায় আড়াই লাখ ডলার অনুদান হারিয়ে অনলাইন ক্যাটালগ তৈরির কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়াও, স্টুটারিং এসোসিয়েশন ফর দ্য ইয়ং নামক একটি সংস্থা, যারা গ্রীষ্মকালীন সঙ্গীত শিবিরের আয়োজন করে, তারাও ৩৫ হাজার ডলারের ঘাটতিতে পড়েছে।

শিল্পকলা বিষয়ক কর্মীরা বলছেন, এনইএ বা এনইএইচ-এর অনুদান শুধু তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা দেয় না, বরং এর একটি “গুণক প্রভাব” রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অনেক সময় বেসরকারি দাতাদের কাছেও একটি আকর্ষণ তৈরি করে।

এই অনুদান স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রকল্পকে সহায়তা করে, যা শিল্পী, কলাকুশলী, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।

দীর্ঘকাল ধরে, এনইএ, এনইএইচ এবং কর্পোরেশন ফর পাবলিক ব্রডকাস্টিংয়ের মতো সংস্থাগুলো সংস্কৃতি জগতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত শিল্পীদের সহায়তা করার জন্য সমালোচিত হয়েছে, তবে তারা টিকে রয়েছে, কারণ তাদের অর্থনৈতিক উপকারিতা অনেক।

বর্তমানে, অনেক প্রতিষ্ঠান জনসমষ্টি এবং বিভিন্ন দাতাদের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহের চেষ্টা করছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত অনুদানের ওপর নির্ভর করা দীর্ঘমেয়াদে সমস্যার সমাধান নয়।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *