চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য উত্তেজনা হ্রাস, বিশ্ব বাজারে স্বস্তি, বাংলাদেশের জন্য সুযোগ?
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান ঘটাতে উভয় দেশ শুল্ক হ্রাসে রাজি হওয়ায় বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে উল্লম্ফন দেখা গেছে। এই খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বেড়েছে এবং তারা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতিকে মন্দা থেকে বাঁচাতে সহায়ক হতে পারে।
সোমবার (গতকালের) শেয়ার বাজারে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ ১,১৬১ পয়েন্ট বা ২.৮১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচক ৩.২৬ শতাংশ এবং প্রযুক্তি খাতের সূচক নাসডাক কম্পোজিট ৪.৩৫ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, বাজারের এই উল্লম্ফনের মূল কারণ হলো অপ্রত্যাশিতভাবে শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত।
শেয়ার বাজারের এই ইতিবাচক প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। অনেক দিন ধরেই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হতাশ ছিলেন। এখন শুল্ক কমানোর ফলে তাদের মধ্যে ঝুঁকি নেয়ার প্রবণতা বেড়েছে, যা বাজারের জন্য খুবই ইতিবাচক।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি এবং চীনের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার ফলস্বরূপ এই সিদ্ধান্ত এসেছে। উভয় দেশই শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে রাজি হয়েছে। যদিও শুল্কের হার এখনো আগের তুলনায় বেশি, তবে এটি বাণিজ্য যুদ্ধের আগের কঠিন পরিস্থিতি থেকে অনেক ভালো।
এই চুক্তির ফলে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য একটি ভালো খবর। বাণিজ্য যুদ্ধ চললে পণ্যের দাম বাড়ার এবং সরবরাহ চেইনে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুল্ক কমানোর ফলে সেই ঝুঁকিগুলো হ্রাস পাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা আসার ঝুঁকি কমবে। এর পাশাপাশি, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং তারা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন।
বাণিজ্য উত্তেজনা হ্রাসের ফলে প্রযুক্তি এবং বিলাসবহুল পণ্যের শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। অ্যাপল, টেসলা, অ্যামাজন এবং অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিলাসবহুল পণ্যের বাজারের কোম্পানিগুলোও এই খবরে উপকৃত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এখন চেষ্টা করছে তাদের সরবরাহ শৃঙ্খলকে আরও শক্তিশালী করতে, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ, সেমিকন্ডাক্টর চিপস এবং স্টিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের ক্ষেত্রে চীনের উপর নির্ভরতা কমাতে চাইছে।
এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্ববাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য, বিশেষ করে পোশাক শিল্পের জন্য তা সহায়ক হবে। এছাড়া, বিদেশি বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনাও বাড়বে।
তবে, এই চুক্তি কত দিন স্থায়ী হবে, সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। বাণিজ্য আলোচনার পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে এখন সবার নজর।
তথ্য সূত্র: CNN