ভূমধ্যসাগরে ভ্রমণের নতুন আকর্ষণ!

ভূমধ্যসাগরে নৌভ্রমণ: নতুন দিগন্তের হাতছানি

পর্যটকদের কাছে নতুন আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে ভূমধ্যসাগরে ছোট আকারের বিলাসবহুল নৌভ্রমণ। প্রচলিত ক্রুজ জাহাজের ভিড় এড়িয়ে, এইসব ছোট জাহাজগুলো যাত্রীদের নিয়ে যায় অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে।

অন্যদিকে, ফরাসি কোম্পানি পনান্ট (Ponant) আগামী দুই বছরে ভূমধ্যসাগরে সাতটি ভিন্ন ধরনের নৌযাত্রা পরিচালনা করবে। তাদের বিশেষ আকর্ষণ হলো ফ্রান্সের রেডিও ক্লাসিকের সাথে অংশীদারিত্বে ইজিয়ান সাগরে সাত রাতের সঙ্গীত-কেন্দ্রিক ভ্রমণ।

এই ধরনের ভ্রমণের প্রধান আকর্ষণগুলো হলো খাদ্যরসিকদের জন্য বিভিন্ন স্বাদের অভিজ্ঞতা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের গভীরতা এবং অপ্রত্যাশিত সব গন্তব্যের সন্ধান। আটলাস ওশান ভয়েজেস (Atlas Ocean Voyages) তাদের “এপিকিউরিয়ান এক্সপেডিশন” চালু করেছে, যেখানে নামকরা শেফ ও খাদ্য বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন কর্মশালা আয়োজন করেন।

বার্সেলোনায় পায়েলা তৈরির প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে মন্টিনিগ্রোর কোটরে ওয়াইন টেস্টিংয়ের মতো নানা আয়োজন থাকে এই ভ্রমণে।

এছাড়াও, তারা স্মিথসোনিয়ান জার্নিস (Smithsonian Journeys) এবং অ্যাবারক্রোম্বি অ্যান্ড কেন্ট-এর (Abercrombie & Kent) সাথে মিলিতভাবে মাল্টা, সিসিলি ও সার্ডিনিয়া সহ ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে ভ্রমণ এবং ২০২৬ সালের আগস্টে স্পেনে সূর্যগ্রহণ দেখার সুযোগ করে দেবে।

ছোট আকারের জাহাজগুলো অপ্রত্যাশিত গন্তব্যের সন্ধানেও দারুণ।

সোয়ান হেলেনিকের (Swan Hellenic) ডায়ানা (Diana) নামক ৯৬-ক্যাপ্টেন বিশিষ্ট একটি জাহাজ পর্তুগাল থেকে ইতালি পর্যন্ত ১১ রাতের ভ্রমণে আলজেরিয়া ও তিউনিসিয়া সহ কম পরিচিত স্থানগুলোতে ভ্রমণ করায়।

এই যাত্রাপথে প্রাচীন কার্থেজের ধ্বংসাবশেষের মতো ইউনেস্কো-তালিকাভুক্ত স্থানগুলো ঘুরে দেখার সুযোগ হয়।

লিન્ડব্ল্যাড এক্সপেডিশনস (Lindblad Expeditions) -এর ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক অরিয়ন (National Geographic Orion) ছোট আকারের হওয়ায় গ্রিক দ্বীপপুঞ্জ, যেমন – ন্যাক্সোস, সিফনোস এমনকি জনমানবহীন ডেস্পোটিকোতে (Despotiko) ভ্রমণ করতে পারে, যেখানে ঐতিহাসিক স্থানগুলো এখনো দৃশ্যমান।

এই জাহাজটি অপ্রত্যাশিত ভ্রমণের জন্য পরিচিত, যা একটি নির্দিষ্ট সময়সূচির পরিবর্তে ডলফিনের দল দেখা বা কেপ সউনিয়নে (Cape Sounion) ধ্বংসাবশেষের পিছনে সূর্যাস্তের মতো অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতার সুযোগ দেয়।

অন্যদিকে, যারা বিলাসবহুল জীবনযাত্রার সাথে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিতে চান, তাদের জন্য সিবার্ন ভেঞ্চার (Seabourn Venture) -এর মতো জাহাজ রয়েছে।

এই জাহাজে প্রশস্ত স্যুট ও ক্যাভিয়ারের মতো সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। ২০২৩ সালের বসন্তে ভূমধ্যসাগরে আত্মপ্রকাশ করা এই জাহাজটি ২০২৬ সালেও একই অঞ্চলে তাদের কার্যক্রম চালাবে।

আর্টিক অঞ্চলে ভ্রমণের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অরোরা এক্সপেডিশনস (Aurora Expeditions) -এর ডগলাস মওসন (Douglas Mawson) নামের ৮৬-ক্যাপ্টেন বিশিষ্ট জাহাজটিও ভূমধ্যসাগরে আসছে।

এটি ২০২৩ সালের শেষের দিকে আড্রিয়াটিক সাগর, ডালমেশিয়ান উপকূল, গ্রিস ও তুরস্কের মতো স্থানে ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছে।

এইসব নৌভ্রমণগুলো একদিকে যেমন আরামদায়ক, তেমনই ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন।

এটি ভ্রমণ প্রেমীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।

তথ্যসূত্র: বিভিন্ন ভ্রমণ বিষয়ক প্রকাশনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *