ট্রাম্পের জয়? বাণিজ্য নয়, মিথ্যাচারের বিভ্রম!

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক হ্রাসের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন মোড় এসেছে। যদিও এই পদক্ষেপকে অনেকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন, তবে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব নিয়ে বিশেষজ্ঞরা ভিন্নমত পোষণ করছেন।

বিশেষ করে, এই দুই বৃহৎ অর্থনীতির বাণিজ্য নীতির পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, তা এখন আলোচনার বিষয়।

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র তাদের অধিকাংশ চীনা পণ্যের ওপর থেকে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়েছে। অন্যদিকে, চীনও তাদের শুল্ক হার ১২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে কমিয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলেও, বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুরনো বাণিজ্য নীতিরই একটি অংশ, যা বাস্তবতার বিকৃত রূপ ছাড়া আর কিছুই নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এই শুল্ক হ্রাসের ফলে ভোক্তাদের উপরও এর প্রভাব পড়তে পারে। একটি গবেষণা অনুসারে, শুল্কের কারণে ২০২৩ সালের মধ্যে মার্কিন ভোক্তাদের প্রায় ২ শতাংশ বেশি দামে পণ্য কিনতে হতে পারে, যা প্রতিটি পরিবারের জন্য বছরে প্রায় ২৮০০ ডলারের সমান।

এছাড়া, কর্মসংস্থানেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, যেখানে প্রায় ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার মানুষের চাকরি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্ক হ্রাসের এই সিদ্ধান্ত বাজারের জন্য সাময়িক স্বস্তি আনলেও, এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। এর কারণ হিসেবে তারা ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি নির্ধারণে অস্থিরতাকে চিহ্নিত করছেন।

তাদের মতে, নীতিমালায় ঘন ঘন পরিবর্তন আসায় ব্যবসায়ীরা তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে সমস্যায় পড়ছেন।

তাহলে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি কিভাবে প্রভাবিত হতে পারে? যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের উপর নাও পড়তে পারে, তবে বিশ্ব অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলো আমাদের বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু প্রভাব ফেলতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, চীনের বাজারে মার্কিন পণ্যের প্রবেশাধিকার সহজ হলে, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের চাহিদা কমতে পারে। আবার, আমদানি পণ্যের দামের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসতে পারে, যা আমাদের অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলবে।

সুতরাং, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারক এবং ব্যবসায়ীদের জন্য বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের দিকে গভীর মনোযোগ দেওয়া জরুরি। দেশের বাণিজ্য নীতিকে সময়োপযোগী করে, নতুন বাজার অনুসন্ধানের মাধ্যমে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়িয়ে, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এই পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *