যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের বিদেশ সফর: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য যাত্রা এবং বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার শাসনামলে বেশ কয়েকটি দেশ সফর করেছেন। সম্প্রতি তিনি সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)-এ সফর করেছেন। এই সফরগুলোতে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ছাড়াও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাধারণত, কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম বিদেশ সফর সেই দেশের পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার এবং দিকনির্দেশনার ইঙ্গিত দেয়।
ট্রাম্পের এই সফরগুলিও এর ব্যতিক্রম ছিল না।
২০১৭ সালের মে মাসে, ট্রাম্প প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরবে যান। সেখানে তিনি তৎকালীন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অস্ত্র চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এছাড়াও, ট্রাম্প ৫০টিরও বেশি মুসলিম-প্রধান দেশের নেতাদের নিয়ে একটি সম্মেলনে অংশ নেন, যা “রিয়াদ সম্মেলন” নামে পরিচিত।
সৌদি আরবের পর ট্রাম্প ইসরায়েল সফর করেন এবং জেরুজালেমের ওয়েস্টার্ন ওয়ালে যান। তিনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের আগে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট সরাসরি ওয়েস্টার্ন ওয়ালে যাননি।
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ বিধিনিষেধ আরোপের আগে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্পের শেষ আন্তর্জাতিক সফর ছিল ভারতে। এর আগে, তিনি বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের আরও অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টদের বিদেশ সফরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিভিন্ন সময়ে তাঁরা বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন। যেমন, ১৯০৬ সালে থিওডোর রুজভেল্ট পানামায় গিয়েছিলেন, যা ছিল কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম বিদেশ সফর। এরপর বিল ক্লিনটন ১৯৯৩ সালে কানাডা এবং জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০১ সালে মেক্সিকো সফর করেন।
বারাক ওবামা ২০০৯ সালে কানাডায় এবং জো বাইডেন ২০২১ সালে যুক্তরাজ্যে সফর করেন, যেখানে তিনি জি-৭ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিদেশ সফরগুলি শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপন বা বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক অবস্থান এবং পররাষ্ট্রনীতির একটি সুস্পষ্ট চিত্র ফুটে ওঠে। এই সফরগুলি বিশ্ব রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে, যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে নতুন পথে চালিত করে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা