স্বামী: ‘আমি ঘুম পাড়িয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছি, ছবি তুলেছি!’ ভয়ঙ্কর স্বীকারোক্তি

ইংল্যান্ডের এক নারীর স্বামী দীর্ঘদিন ধরে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাকে ধর্ষণ ও ছবি তোলার কথা স্বীকার করেছেন। বিবিসি সহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ‘কেট’ (ছদ্মনাম)-এর স্বামী রাতের বেলা ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে চা খাওয়াতেন, এরপর তিনি ঘুমিয়ে গেলে তাকে ধর্ষণ করতেন এবং সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করতেন।

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর কেট তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেও শুরুতে তা তুলে নেন। তবে পরে পুলিশের সহায়তায় তিনি আবার অভিযোগ জানালে, আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথমে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি হয়নি সরকারি কৌঁসুলি দপ্তর (Crown Prosecution Service – CPS)। পরে অবশ্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে তারা তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে।

নির্যাতিতা কেট জানান, তার স্বামী তাকে বলেছিলেন, “আমি তোমাকে ধর্ষণ করেছি। আমি তোমাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়েছিলাম এবং তোমার ছবি তুলেছি।” কেট আরও জানান, ঘটনার কথা তিনি প্রথমে তার বোনকে জানানোর আগে প্রায় এক বছর সময় নিয়েছিলেন। স্বামীর স্বীকারোক্তির পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার ওজনও কমতে শুরু করে।

পরে কেটের মা ডেভন ও কর্নওয়াল পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু পরে কেট তার সন্তানদের কথা ভেবে অভিযোগ তুলে নেন। তবে ঘটনার ছয় মাস পর তিনি পুনরায় পুলিশের দ্বারস্থ হন এবং স্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা মাইক স্মিথ এর তদন্তের নেতৃত্ব দেন।

তদন্তের সময়, কেট জানান, দিনের পর দিন তিনি স্বামীর দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এমনকি স্বামীর বিরুদ্ধে ঘুমের ওষুধ ব্যবহার ও তার অপব্যবহারের অভিযোগও করেন তিনি। স্বামী তাকে বলতেন, ‘আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, তাই আমি কি করেছি, সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই’।

২০২২ সালে আদালতের শুনানিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আদালত তাকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেন এবং আজীবন ভুক্তভোগীর থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেন।

ভুক্তভোগী কেট জানিয়েছেন, “আমি চাই, অন্যরাও বুঝুক যে, এমন অত্যাচার নীরবে ঘটে যায়। আমি এখনো পুরোপুরি বুঝতে পারছি না আমার সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল এবং এর প্রভাব কী ছিল।”

তথ্য সূত্র: বিবিসি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *