মধ্যপ্রাচ্যের ‘সোনার যুগে’ ট্রাম্পের মুগ্ধতা: আমেরিকার জন্য কি স্বপ্ন?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে। এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ এবং তাদের উন্নয়নের মডেল অনুসরণ করার আকাঙ্ক্ষা অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে।

সম্প্রতি সৌদি আরব ও কাতারের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সৌদি আরবে ট্রাম্পকে দেওয়া হয় রাজকীয় সংবর্ধনা। আধুনিকতার পথে চলা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে তাঁর উষ্ণ সম্পর্ক ছিল চোখে পড়ার মতো।

এই সফরে ট্রাম্প এমন সব দেশের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত লাভের বিভাজন প্রায় অস্পষ্ট। তাঁর এই সফরকালে ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যরাও ব্যবসায়িক চুক্তি করেছেন, যা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির চালিকাশক্তি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তেল সমৃদ্ধ দেশগুলোর আর্থিক শক্তি বাড়ছে, যা পশ্চিমা প্রভাবকে হ্রাস করছে।

ক্ষুদ্র একটি দেশ হয়েও কাতার কূটনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিরোধ মীমাংসায় তারা মধ্যস্থতা করে, যা তাদের বিশেষ পরিচিতি এনে দিয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প উপসাগরীয় দেশগুলোর কাছ থেকে বিশাল পরিমাণ বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে চাইছেন। তাঁর মতে, এই অঞ্চলের দেশগুলোতে উন্নয়নের যে গতি, তা অনুসরণযোগ্য।

উন্নত শহর নির্মাণ, খেলাধুলার প্রসার এবং অবকাঠামো উন্নয়ন তাঁর দৃষ্টি কেড়েছে। তবে, এই অঞ্চলের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ রয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও তাদের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

কাতারের কূটনৈতিক তৎপরতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দেশটি বিভিন্ন দেশের মধ্যে চলমান সংঘাত নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ফিলিস্তিন থেকে শুরু করে ইউক্রেন পর্যন্ত—সংকট সমাধানে তাদের প্রচেষ্টা প্রশংসিত হয়েছে। এমনকি, বিভিন্ন চরমপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গেও তারা আলোচনার পথ খোলা রেখেছে, যা তাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বিশেষ স্থান দিয়েছে।

অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পর্ক গভীর হচ্ছে।

তাদের সহযোগিতা আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে আরও সুসংহত করতে সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে, ট্রাম্পের এই সফর এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর প্রতি তাঁর আগ্রহ বিভিন্ন মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তাঁর নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত সমালোচিত হয়েছে, বিশেষ করে মানবাধিকার বিষয়ক বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের জন্য এই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিক উপসাগরীয় দেশগুলোতে কর্মরত।

এই অঞ্চলের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *