আমেরিকায় এখনো ট্রাম্পের বিশাল শুল্ক, মাথায় হাত ক্রেতাদের!

চীন থেকে আসা কিছু পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত এই শুল্কের বোঝা বিশেষভাবে বহন করতে হচ্ছে মার্কিন ভোক্তাদের, বিশেষ করে যারা কম আয়ের মানুষ এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে সস্তা জিনিস কেনাকাটা করেন।

সম্প্রতি, ট্রাম্প প্রশাসন চীন থেকে আসা কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে, অনেক আমেরিকান নাগরিক যারা Shein এবং Temu-এর মতো ওয়েবসাইটে কেনাকাটা করেন, তারা কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন।

আগে, চীন থেকে আসা প্রায় ৮০০ ডলার বা তার কম মূল্যের পণ্যের ওপর ১২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হতো। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডাক বিভাগের মাধ্যমে আসা পণ্যের ওপর এই শুল্ক কমিয়ে ৫৪ শতাংশ করা হয়েছে।

বাণিজ্যিক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আসা পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কের হার ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।

এই পরিবর্তনের কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যেকার বাণিজ্য সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। যদিও সম্পর্ক এখনো আগের মতো স্বাভাবিক হয়নি।

চীন এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর তাদের শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ করেছে, যা ৯০ দিনের জন্য কার্যকর থাকবে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ পণ্যের ওপর শুল্ক ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক কমানোর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কম আয়ের আমেরিকানরা। কারণ, তারা সাধারণত চীন থেকে আসা সস্তা পণ্যের ওপর নির্ভরশীল।

এখন তাদের হয়তো বেশি দামে জিনিস কিনতে হবে এবং পণ্য পেতেও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের ই-কমার্স সাইটগুলোর আধিপত্য বিস্তারের একটি কারণ ছিল এই ‘ডি মিনিমাস’ ছাড়। এই ছাড়ের ফলে Shein এবং Temu-এর মতো কোম্পানিগুলো কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারছিল।

তবে শুল্ক আরোপের পর পরিস্থিতি বদলে যায়। ইউএসপিএস (USPS) কিছুদিনের জন্য চীন থেকে আসা পার্সেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং পণ্য পেতে বেশি সময় লাগতে শুরু করে।

এই পরিস্থিতিতে, কোম্পানিগুলো তাদের সরবরাহ ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাস করতে শুরু করেছে। Shein এবং Temu-এর মতো ই-কমার্স কোম্পানিগুলো এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের গুদাম তৈরি করছে, যাতে করে দ্রুত পণ্য সরবরাহ করা যায়।

এমনকি, Temu তাদের সরবরাহকারীদের কাছ থেকে পণ্যগুলো সরাসরি মার্কিন গুদামে পাঠানোর জন্য বলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, এই ধরনের পরিবারের সদস্যরা সাধারণত সস্তা পণ্যের ওপর নির্ভরশীল।

এই শুল্ক কমানোর ফলে একদিকে যেমন কিছু সুবিধা হয়েছে, তেমনি অনেক সমস্যাও এখনো বিদ্যমান। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, তেমনি ভোক্তাদের মধ্যেও শুল্ক নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

বর্তমানে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার এই বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে। এর ফলে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

কারণ, বিশ্ব বাণিজ্যের পরিবর্তন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য শুল্ক বৃদ্ধি একটি উদ্বেগের কারণ হতে পারে, কারণ এর ফলে তাদের পণ্য রপ্তানিতে সমস্যা হতে পারে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *