আশির কোঠায় পা রাখা এক নারীর অদম্য ইচ্ছাশক্তি, অধ্যবসায় আর শিক্ষাজীবনের প্রতি ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ক্লেটন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে সম্প্রতি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন ৭৯ বছর বয়সী প্যাট্রিসিয়া সিয়াস এলিস।
৬০ বছর আগে, পারিবারিক কারণে শিক্ষাজীবন থেকে বিরতি নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। স্বামীর এবং ছেলের পড়াশোনায় সহায়তা করতে গিয়ে নিজের স্বপ্নকে একপাশে সরিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু শিক্ষার আলো থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারেননি এলিস।
পরিবারের দায়িত্ব শেষ হওয়ার পর, প্রায় আট বছর আগে তিনি আবার শিক্ষার পথে ফিরে আসেন। আটলান্টা মেট্রো কলেজে ভর্তি হওয়ার পর, তিনি ক্লেটন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে স্থানান্তরিত হন।
প্যাট্রিসিয়া জানান, ছেলের একটি কৌতুকপূর্ণ মন্তব্যই তাকে নতুন করে পড়াশোনা শুরু করতে উৎসাহিত করেছিল। ছেলে তাকে বলেছিলেন, তিনি যেন “সারাদিন টিভির নাটক” না দেখে বরং কোনো চাকরি খুঁজে নেন অথবা আবার পড়াশোনা শুরু করেন।
এলিস এর উত্তরে বলেছিলেন, “আমি তো কোনো চাকরি করব না।” এরপর ধীরে ধীরে তিনি প্রতিটি সেমিস্টারে কিছু ক্লাস করে তার স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের দিকে এগিয়ে যান।
২০২২ সালে, এলিসের জীবনে আসে এক অপ্রত্যাশিত বাধা। তার কিডনিতে ১০ পাউন্ডের একটি টিউমার ধরা পড়ে। অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে তিনি আবার ক্লাসে ফিরে আসেন এবং দৃঢ়তার সঙ্গে তার পড়াশোনা চালিয়ে যান।
প্যাট্রিসিয়া বলেন, “পুরো প্রক্রিয়াটিতে, বিশেষ করে গত বছর যখন আমি বুঝতে পারলাম যে সত্যিই এটা হতে যাচ্ছে, তখন আমি খুব আনন্দিত ছিলাম।
ক্লেটন স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ড. জর্জি লুইস বলেছেন, প্যাট্রিসিয়ার এই সাফল্য পুরো শিক্ষাঙ্গনের জন্য এক অনুপ্রেরণা। তিনি আরও বলেন, “যখন তিনি মঞ্চে উঠবেন, সবাই সম্ভবত দাঁড়িয়ে যাবে। কারণ তাকে এড়িয়ে যাওয়া কঠিন।”
স্নাতক হওয়ার পর, এলিস এখন তার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবছেন। তিনি হয়তো ভবিষ্যতে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে ভর্তি হবেন, তবে বর্তমানে ক্লেটন স্টেটে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়ে সমাজের জন্য কিছু করতে চান। তিনি মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলো ছিল তার জীবনের সেরা সময়।
তথ্য সূত্র: পিপলস