ত্রিপোলিতে ভয়াবহ সংঘর্ষ: কয়েক বছরে এমন সহিংসতা দেখেনি লিবিয়া!

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে কয়েক বছর পর আবারও তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। সোমবার এক প্রভাবশালী মিলিশিয়া নেতার হত্যাকাণ্ডের জের ধরে প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে এই লড়াই শুরু হয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল।

খবর পাওয়া যাচ্ছে, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ মিশন।

সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ত্রিপোলিতে চলমান এই অস্থিরতা দেশটির জাতীয় ঐক্যের সরকারের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদ দাবাইবাহকে আরও শক্তিশালী করতে পারে, যিনি তুরস্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখেন।

২০১১ সালে ন্যাটো সমর্থিত এক অভ্যুত্থানে দীর্ঘদিনের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই লিবিয়া রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল হতে পারেনি।

২০১৪ সালে দেশটি বিভক্ত হয়ে যায় এবং পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে দুটি ভিন্ন অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। যদিও ২০২০ সালে একটি যুদ্ধবিরতি হয়, কিন্তু পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।

জানা গেছে, লিবিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ তেল রপ্তানিকারক দেশ এবং ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য একটি প্রধান পথ।

তুরস্ক, রাশিয়া, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো বিদেশি শক্তিগুলোও এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে।

তবে, বর্তমানে ত্রিপোলিতে যে যুদ্ধ চলছে, তার থেকে অনেক দূরে দেশটির প্রধান তেলক্ষেত্রগুলো অবস্থিত।

বিশ্লেষকদের মতে, পূর্বাঞ্চলে খলিফা হাফতারের নেতৃত্বে লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এলএনএ)-এর এক দশকের বেশি সময় ধরে আধিপত্য ছিল।

অন্যদিকে, ত্রিপোলি এবং পশ্চিমাঞ্চলে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষমতার বিভাজন দেখা যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রধানমন্ত্রী দাবাইবাহ ইতোমধ্যে অবৈধ সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

সোমবার মিলিশিয়া প্রধান আব্দুলগনি কিকলি, যিনি ঘানিওয়া নামে পরিচিত, নিহত হওয়ার পর দাবাইবাহর সঙ্গে জোটবদ্ধ মিলিশিয়া বাহিনীগুলো, যেমন – ৪৪৪ ব্রিগেড এবং ১১১ ব্রিগেড-এর কাছে এসএসএ’র (স্ট্যাবিলাইজেশন সাপোর্ট অ্যাপারেটাস) পরাজয় হয়।

এর ফলে রাজধানী ত্রিপোলিতে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে স্পেশাল ডিটারেন্স ফোর্স (রাদা) নামক প্রভাবশালী মিলিশিয়া গোষ্ঠীটি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *