পুরুষেরাই বেশি! ‘ভাঙা হৃদয়ের’ কারণে দ্বিগুণ মৃত্যুর আশঙ্কা, বলছে গবেষণা

পুরুষদের মধ্যে ‘ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোম’-এ (Heartbreak Syndrome) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি নারীদের তুলনায় অনেক বেশি। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে (Journal of the American Heart Association) প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘তাকো-সুবো কার্ডিওমায়োপ্যাথি’ বা ‘ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে মৃত্যুর হার ১১.২ শতাংশ, যেখানে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার ৫.৫ শতাংশ।

এই সিন্ড্রোম আসলে কী? চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা তীব্র আবেগ থেকে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা দুর্বল হয়ে পড়লে এই অবস্থা তৈরি হয়।

কারো প্রিয়জন বিয়োগ হলে, বিবাহবিচ্ছেদ কিংবা অন্য কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষজন এই সমস্যার শিকার হতে পারেন। এর ফলে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্টের মতো হৃদরোগের উপসর্গ দেখা দেয়, যা হার্ট অ্যাটাকের মতোই গুরুতর হতে পারে।

গবেষণায় জানা গেছে, এই সিন্ড্রোমের কারণে মৃত্যুর বিভিন্ন কারণের মধ্যে রয়েছে কার্ডিওজেনিক শক, যা হৃদযন্ত্র পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে ঘটে।

এছাড়াও, হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা, হৃদপিণ্ডের স্পন্দন দ্রুত হওয়া (এট্রিয়াল ফিব্রিলেশন), স্ট্রোক এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

গবেষণাটি ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রায় ২ লক্ষ রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে। যদিও এই সিন্ড্রোমে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নারীদের মধ্যে বেশি, তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক রূপ নিতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রায় ৮৩ শতাংশই নারী, কিন্তু তাঁদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৬.৫ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষরা সামাজিক সমর্থন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে নারীদের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে থাকেন।

কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁরা সহজে তাঁদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেন না, যা তাঁদের শরীরের উপর আরও বেশি প্রভাব ফেলে। তাই, এই সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রে তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ হল, এমন কোনো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মানসিক চাপ কমাতে এবং হৃদরোগ থেকে বাঁচতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনাও জরুরি।

তথ্য সূত্র: পিপলস (People)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *