বাস্তবতা: প্রাক্তন শিশু তারকার জীবন, মাদকাসক্তি, এবং ক্যামেরার ওপারে মৃত্যু
টিভি’র পর্দায় ঝলমলে আলোয় যাদের শৈশব কেটেছে, তারা যখন বড় হয়, তাদের জীবন কি সবসময় একই রকম থাকে? লুকিন্ডা বেরির উপন্যাস ‘ওয়ান ইন ফোর’-এর একটি অংশ সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজে।
গল্পটি একটি রিয়েলিটি শোকে কেন্দ্র করে, যেখানে প্রাক্তন শিশু তারকারা তাদের মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু ক্যামেরার সামনেই ঘটে যায় এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা—তাদেরই একজন, ম্যাডির মৃত্যু।
ঘটনাটি ঘটে যখন ক্যামেরার ফোকাস তখনও তাদের উপর। ম্যাডির মৃত্যুর পর, পুরো সেটে নেমে আসে শোকের ছায়া। সবার মনে একটাই প্রশ্ন, কিভাবে ঘটল এই মর্মান্তিক পরিণতি?
ঘটনার তদন্তে নামেন ডাঃ লরেল হারলো। তিনি এই শোয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং তার নিজেরও কিছু গোপন কথা ছিল। তাই, সবার আগে তিনি জানতে চান, এই ঘটনার পেছনে আসল কারণ কী?
ম্যাডির মৃত্যুর দৃশ্যটি ছিল ভয়াবহ। বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসার পরেই সে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। তার মাথায় রক্তক্ষরণ হতে থাকে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে যায় সকলে।
এমনকি যারা ক্যামেরার পিছনে ছিলেন, তারাও যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না কী ঘটছে।
শোয়ের প্রযোজনা বন্ধ করে দেওয়া হয়, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরে ম্যাডির মৃত্যুর ভিডিও। সবার মনে তখন একই প্রশ্ন, খ্যাতি আর খ্যাতির ঝলমলে দুনিয়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকা এই অন্ধকার দিকটা কেমন?
ঘটনার পর ক্রিস্টাল মেডো নামের বাড়িটির বাইরে দেখা যায় শোকের আবহ। শোকাহতদের মধ্যে ছিলেন গিয়া। তিনি ছিলেন ম্যাডির খুব কাছের একজন। লরেলের সঙ্গে দেখা হওয়ার পরে, গিয়া কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ম্যাডির চলে যাওয়াটা যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন ওঠে, রিয়েলিটি শো-এর নামে তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এই ধরনের খেলা কতটা যুক্তিসঙ্গত? খ্যাতির শিখরে ওঠা শিশুদের জীবনের এই কঠিন দিকগুলো কি সবসময় আলোচনা করা হয়? মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য তাদের দুর্বলতাকে এভাবে ব্যবহার করা কি উচিত?
‘ওয়ান ইন ফোর’ উপন্যাসটি আমাদের সমাজের এই দিকগুলো নতুন করে ভাবতে শেখায়। লেখক লুকিন্ডা বেরি দেখিয়েছেন, কিভাবে খ্যাতির মোহে মানুষ নিজেদের অজান্তেই এক গভীর অন্ধকারে তলিয়ে যায়।
তথ্য সূত্র: ‘ওয়ান ইন ফোর’ উপন্যাস থেকে গৃহীত। লেখক: লুকিন্ডা বেরি।