প্রখ্যাত র্যাপ সঙ্গীত শিল্পী শন ‘ডিডি’ কম্বস-এর বিরুদ্ধে চলমান র্যাকেটিয়ারিং মামলার শুনানিতে বিস্ফোরক সাক্ষ্য দিলেন তাঁর সাবেক প্রেমিকা ক্যাসান্ড্রা ভেনচুরা। নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ এনে মঙ্গলবার আদালতে নিজের জবানবন্দি দেন ভেনচুরা, যিনি ‘ক্যাসি’ নামেই পরিচিত।
এই মামলায় ডিডি-র বিরুদ্ধে যৌন পাচার ও আরও কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রায় দু’দশক আগে তাঁদের সম্পর্কের সূচনা হয়। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে ভেনচুরা জানিয়েছেন, কম্বস-এর সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় হয় যখন তাঁর বয়স ১৯ বছর।
২০০৬ সালে কম্বসের ‘ব্যাড বয় রেকর্ডস’-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে সেই সম্পর্ক ভালোবাসার দিকে মোড় নেয়।
মিয়ামিতে একটি নৌকাবিহারের অনুষ্ঠানের পর তাঁদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়।
আদালতে ভেনচুরার ভাষ্য অনুযায়ী, শুরুতে সবকিছু সুন্দর থাকলেও ধীরে ধীরে কম্বসের আসল রূপ প্রকাশ হতে শুরু করে। তিনি জানান, কম্বস সবসময় তাঁকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইতেন।
পোশাক থেকে শুরু করে কার সঙ্গে তিনি কথা বলবেন, এমনকি তিনি কী কাজ করবেন, সবকিছুতেই কম্বসের ছিল কর্তৃত্ব।
ভেনচুরার কথায়, “তিনি সবসময় চাইতেন আমি তাঁর অনুগত থাকি।” তাঁর আচরণে একসময় মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের মাত্রা বাড়ে।
সামান্য ভুল হলেই মারধর করতেন কম্বস।
সাক্ষ্যে ভেনচুরা জানান, কম্বসের সঙ্গে তাঁর বিবাদের জেরে শরীরে কালশিটে পড়ত, ঠোঁট ফেটে যেত এবং মাথায় আঘাতও লেগেছিল।
নির্যাতনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।”
এই মামলার শুনানিতে ‘ফ্রিক অফস’ নামে পরিচিত একটি ঘটনার বর্ণনা দেন ভেনচুরা। যেখানে কম্বস অন্য পুরুষের সঙ্গে তাঁকে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করতেন এবং নিজে তা উপভোগ করতেন।
তাঁর অভিযোগ, এই ধরনের ঘটনা নিয়মিত ঘটত এবং এতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তিনি আরও জানান, এই ‘ফ্রিক অফস’-এর জন্য তিনি মাদক নিতে বাধ্য হতেন।
২০১৬ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হোটেলে কম্বসের হাতে মারধরের শিকার হয়েছিলেন বলেও জানান ভেনচুরা।
সেই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজও আদালতে পেশ করা হয়েছে।
তাঁর দাবি, ‘ফ্রিক অফস’ বন্ধ করতে চাওয়ায় কম্বস তাঁকে মারধর করেন।
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে ভেনচুরা আরও জানান, কম্বসের কর্মীরা প্রায়ই এই ‘ফ্রিক অফস’-এর ব্যবস্থা করতেন।
তাঁরা হোটেল বুক করতেন এবং যৌনকর্মীদের আনা-নেওয়া করতেন। এমনকি, ঘটনার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যেমন বেবি অয়েল সরবরাহ করতেন।
ভেনচুরার কথায়, “আমি সবসময় আতঙ্কে থাকতাম। আমার মনে হতো, আমার কোনো স্বাধীনতা নেই।”
ডিফেন্সের আইনজীবী অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তাঁদের দাবি, ভেনচুরার অভিযোগগুলো প্রতিশোধের অংশ।
তবে, ডিডি কম্বস-এর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন