ডিডির বিরুদ্ধে মামলার শুনানিতে ক্যাসি ভেন্টুরার বিস্ফোরক বয়ান: ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী!

ডিডি কম্বস-এর বিরুদ্ধে মামলার শুনানিতে ক্যাসান্ড্রা ভেনচুরার (ক্যাসি) সাক্ষ্য: বিস্তারিত

যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতিমান র‍্যাপ সঙ্গীত শিল্পী শন ‘ডিডি’ কম্বসের বিরুদ্ধে চলমান র‍্যাকেটিয়ারিং ও মানব পাচার মামলার শুনানিতে প্রাক্তন প্রেমিকা ক্যাসান্ড্রা ভেনচুরার (ক্যাসি) সাক্ষ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মঙ্গলবার আদালতে ৩৫ বছর বয়সী ক্যাসি তার প্রাক্তন প্রেমিক ডিডি কম্বসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন।

ক্যাসির সাক্ষ্য অনুযায়ী, প্রায় দুই দশক আগে, যখন তাঁর বয়স ১৯ ছিল, তখন ডিডির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শুরু হয়। ২০০৬ সালে ডিডির কোম্পানি, ‘ব্যাড বয় রেকর্ডস’-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। ক্যাসি জানান, তিনি একসময় ডিডিকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন এবং তাঁর ‘ছোট্ট ছায়া’র মতো সর্বত্র তাঁর সঙ্গে থাকতেন।

আদালতে ক্যাসি অভিযোগ করেন, ডিডি সম্পর্কের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণকারী ছিলেন। তাঁর পোশাক থেকে শুরু করে কার সঙ্গে কথা বলবেন, সবকিছুতেই ডিডির নিয়ন্ত্রণ ছিল। এমনকি তাঁর মেজাজ খারাপ হলে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হতো ক্যাসিকে। ডিডি বিভিন্ন সময়ে তাঁকে মারধর করতেন, তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা যেত।

ক্যাসির ভাষ্যমতে, ডিডি তাঁর কর্মীদের মাধ্যমে তাঁর জিনিসপত্র সরিয়ে নিতেন এবং ঘর থেকে বের করে দিতেন। এমনকি তিনি যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেটার ভাড়া ডিডি দিলেও, তাঁকে বের করে দেওয়া হতো।

ক্যাসির অভিযোগ, ডিডি তাঁর কর্মীদের সহায়তায় ‘ফ্রিক অফস’ নামে পরিচিত যৌন কার্যকলাপে লিপ্ত হতে বাধ্য করতেন। যেখানে ডিডি অন্য পুরুষের সঙ্গে ক্যাসিকে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বলতেন এবং নিজে তা উপভোগ করতেন। এই ধরনের ঘটনা নিয়মিত ঘটত এবং একসময় এটা তাঁর কাছে ‘চাকরির’ মতো হয়ে গিয়েছিল। তিনি জানান, নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে মাদক নিতেন। এই ‘ফ্রিক অফস’-এর কারণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।

ক্যাসির সাক্ষ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে লস অ্যাঞ্জেলের একটি হোটেলে ডিডি তাঁকে মারধর করেন। ঘটনাটি ঘটেছিল যখন ক্যাসি ‘ফ্রিক অফস’ শেষ হওয়ার আগেই সেখান থেকে চলে যেতে চেয়েছিলেন। ডিডি তাঁকে ধরে মাটিতে ফেলে দেন, লাথি মারেন এবং তাঁর জিনিসপত্র কেড়ে নেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে।

আদালতে ক্যাসি আরও জানান, ডিডির কর্মীরা প্রায়ই ‘ফ্রিক অফস’-এর জন্য হোটেলের ঘর বুক করতেন। ডিডি নিজেই ক্যাসিকে বলতেন কোন যৌনকর্মীকে ভাড়া করতে হবে। ক্যাসি তাঁদের অনলাইনে খুঁজে নিতেন এবং ডিডির সম্মতিক্রমে তাঁদের আনা হতো। ডিডি তাঁদের নগদ পারিশ্রমিক দিতেন এবং ভ্রমণের ব্যবস্থাও করতেন।

ক্যাসির ভাষ্য অনুযায়ী, এই ঘটনার সঙ্গে ডিডির কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা ছিল, যা প্রমাণ করে যে ডিডি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা একটি অপরাধ চক্রের মতো কাজ করতেন।

অন্যদিকে, ডিডির আইনজীবীরা দাবি করেছেন, যৌন সম্পর্কগুলো ছিল পারস্পরিক সম্মতিতে এবং গার্হস্থ্য সহিংসতার অভিযোগ র‍্যাকেটিয়ারিং বা মানব পাচারের প্রমাণ হতে পারে না।

মামলার শুনানিতে ক্যাসির পাশাপাশি ড্যানিয়েল ফিলিপ নামের আরেকজন সাক্ষীও ডিডির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ড্যানিয়েল জানিয়েছেন, ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে তিনি কয়েকবার ক্যাসির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, যেখানে ডিডি উপস্থিত ছিলেন এবং তা উপভোগ করতেন।

এই মামলার রায় ডিডি কম্বসের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *