আতঙ্কের রাতে জোড়া খুন! মেনেনডেজ ভাইদের ভাগ্য কি বদলাবে?

শিরোনাম: মেনেনডেজ ভাইদের মামলার নতুন মোড়: প্যারোলের সম্ভাবনা, মুক্তির অপেক্ষায়?

ক্যালিফোর্নিয়ার (ক্যালিফোর্নিয়া) কুখ্যাত মেনেনডেজ ভাইদের – এরিক ও লাইল মেনেনডেজ – তাদের প্যারেন্টস, জোসে এবং কিটি মেনেনডেজ-কে ১৯৯৯ সালে হত্যার দায়ে নতুন করে সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। আদালতের এই রায়ের ফলে, তারা এখন প্যারোলের যোগ্য হয়েছেন এবং তাদের কারামুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই মামলার দীর্ঘ এবং জটিল ইতিহাস, যা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, তা আবারও আলোচনার কেন্দ্রে।

১৯৮৯ সালের আগস্ট মাসে, বেভারলি হিলসের মেনেনডেজ পরিবারের বাড়িতে জোসে মেনেনডেজ এবং তাঁর স্ত্রী কিটি মেনেনডেজ-কে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরিক ও লাইল, যারা নিহতদের পুত্র ছিলেন, প্রথমে পুলিশের কাছে তাদের মা-বাবার মৃত্যুর খবর জানান। এরপর, তদন্তে তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় এবং তারা গ্রেপ্তার হন।

শুরুর দিকে, অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম-ডিগ্রি হত্যার অভিযোগ আনা হয়। বিচার চলাকালীন, তারা তাদের বাবা কর্তৃক বছরের পর বছর ধরে শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন। তাদের আইনজীবীরা যুক্তি দেন যে, আত্মরক্ষার কারণেই তারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তাদের আর্থিক লাভের জন্য এই কাজ করার অভিযোগ করেন।

মামলার শুনানির সময়ে একাধিকবার জুরিদের মধ্যে বিভেদ দেখা দেয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিচার অনুষ্ঠিত হলেও, জুরিদের ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় তা বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীতে, ১৯৯৬ সালে হওয়া দ্বিতীয় বিচারে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যা তাদের প্যারোলের সম্ভাবনাও বাতিল করে দেয়।

কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মামলার মোড় ঘুরতে থাকে। সম্প্রতি, একটি নতুন তথ্যচিত্র এবং নেটফ্লিক্সের একটি সিরিজে এই মামলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়, যা জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে। এই ধারাবাহিকগুলোতে, মেনেনডেজ ভাইদের ওপর তাদের বাবার দ্বারা হওয়া নির্যাতনের বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে। এর পরেই, ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের আইনজীবী জর্জ গ্যাসকন-সহ অনেকে এই মামলার পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

২০২৩ সালে, একটি নতুন তথ্যচিত্রের মাধ্যমে জোসে মেনেনডেজের বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ ওঠে। একটি প্রাক্তন বালক ব্যান্ড সদস্য দাবি করেন যে, তিনি কিশোর বয়সে জোসের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। এর ভিত্তিতে, মেনেনডেজ ভাইদের আইনজীবীরা তাদের সাজা পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেন।

দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর, ২০২৩ সালে আদালত তাদের কারাদণ্ডের রায় পরিবর্তন করে। এর ফলে, তাদের প্যারোলের আবেদন করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখন ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের প্যারোল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে যে তাদের মুক্তি দেওয়া হবে কিনা। যদি বোর্ড প্যারোলের সুপারিশ করে, তবে বিষয়টি অনুমোদনের জন্য গভর্নর গ্যাভিন নিউসামের কাছে যাবে।

এই মামলার চূড়ান্ত পরিণতি এখনো অনিশ্চিত। তবে, মেনেনডেজ ভাইদের মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায়, বিশ্বজুড়ে তাদের সমর্থক এবং সমালোচকদের মধ্যে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *