মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাদক ওভারডোজের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমে এসেছে, যা গত পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন। সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত ছিল।
তবে, এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে না পারলে তা গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (Centers for Disease Control and Prevention – CDC) থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, ২০২৪ সালে আনুমানিক ৮০,৩৯১ জন overdose-এর শিকার হয়ে মারা গেছেন।
যা ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ কম। এই সংখ্যাটি প্রায় ৩০,০০০ কম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। সম্ভবত, মাদক প্রতিরোধের জন্য নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলস্বরূপ এই পরিবর্তন এসেছে।
তবে, এই সাফল্যের ধারা ধরে রাখতে হলে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে overdose-এর প্রধান কারণ হলো সিনথেটিক ওপিওড, বিশেষ করে ফেনটানিল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ফেনটানিলের কারণে মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই ধরনের মৃত্যু প্রায় ৩৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এছাড়াও, মেথামফেটামিন এবং কোকেনের কারণে মৃত্যুহারও যথাক্রমে ২১ শতাংশ এবং ২৮ শতাংশ কমেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মাদক ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেকেই এখন মাদক ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি ‘সন্ধিক্ষণে’ পৌঁছেছেন। কারণ হিসেবে মাদকের গুণগত মান এবং সহজলভ্যতাকে দায়ী করা হচ্ছে।
বাজারে আসা নতুন মাদক, যেমন ‘ট্র্যাঙ্ক’ নামে পরিচিত জাইলজিন ব্যবহারের ফলে অনেকে হতাশ হচ্ছেন। এর কারণ হিসেবে মাদকটির অপ্রত্যাশিত প্রভাব এবং আসক্তি তৈরির ক্ষমতাকে দায়ী করা হয়।
তবে, মাদক নির্মূলে ফেডারেল সরকারের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিতে পরিবর্তন আসায় এই ইতিবাচক প্রবণতা অব্যাহত থাকবে কিনা, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
যদিও, স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ (US Department of Health and Human Services) সম্প্রতি মাদক সংকট মোকাবিলায় তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
অন্যদিকে, বাজেট কাটছাঁটের কারণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (CDC)।
এই পরিস্থিতিতে মাদক প্রতিরোধের কর্মসূচিগুলোতে অর্থায়ন কমে গেলে তা ভালো ফল বয়ে আনবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা অব্যাহত রাখা না গেলে, মাদক নির্মূলে অর্জিত অগ্রগতি ধরে রাখা কঠিন হবে।
মাদকাসক্তি নিরাময় এবং পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলির মতে, বর্তমানে অনেকেই মাদক থেকে মুক্তি পেতে প্রস্তুত। এমতাবস্থায়, মাদক ব্যবহারকারীদের জন্য উপযুক্ত সহায়তা এবং পুনর্বাসন কার্যক্রম আরও জোরদার করা উচিত।
মাদকাসক্তি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য।
মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: CNN