যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান, তুলসী গাব্বার্ড, সম্প্রতি দেশটির শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা বিশ্লেষক দলের দুইজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই বরখাস্তের পেছনে মূল কারণ হিসেবে জানা যায়, গোয়েন্দা সংস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব দূর করা এবং মিডিয়াতে তথ্যের ফাঁস বন্ধ করার চেষ্টা করছেন গাব্বার্ড।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিলের (এনআইসি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান মাইক কলিন্স এবং তার সহযোগী মারিয়া ল্যাঙ্গান-রিখফ।
এনআইসি হলো যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণকারী দল, যাদের কাজ হলো দেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলোর মূল্যায়ন করা।
গাব্বার্ডের এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এসেছে যখন তিনি গোয়েন্দা সংস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলেছেন। সমালোচকদের মতে, অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের অপসারণের ফলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জোনাথন প্যানিকফ, যিনি এক সময় এনআইসিতে কাজ করেছেন এবং কলিন্স ও ল্যাঙ্গান-রিখফের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন, তিনি কলিন্সকে একজন “অসাধারণ পেশাদার” এবং ল্যাঙ্গান-রিখফকে “অতুলনীয় বিশ্লেষক” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
অন্যদিকে, গাব্বার্ডের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সমন্বয় করে গোয়েন্দা সংস্থাকে “রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত” করার চেষ্টা চলছে।
তবে, এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিষয়ক বিশ্লেষণে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা, তা নিয়ে ইতোমধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে।
এই ঘটনার কিছু দিন আগেই, এনআইসি ভেনেজুয়েলার একটি গ্যাং, “ট্রেন দে আরাগওয়া” সম্পর্কে একটি মূল্যায়ন প্রকাশ করে।
এই মূল্যায়নে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন বিষয়ক নীতির বিরোধিতা করা হয়। এই ঘটনার সঙ্গে কর্মকর্তাদের বরখাস্তের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে, মিডিয়াতে তথ্যের ফাঁস বন্ধ করার জন্য গাব্বার্ডের কঠোর পদক্ষেপকে অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখছেন।
গাব্বার্ড সম্প্রতি জানিয়েছেন, মিডিয়াতে তথ্য ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অভ্যন্তরীণ ১১টি তদন্ত চলছে এবং এর মধ্যে তিনটি মামলা বিচারের জন্য বিচার বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই অভ্যন্তরীণ ঘটনাপ্রবাহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গোয়েন্দা তথ্য ও বিশ্লেষণের গুরুত্ব আরও একবার প্রমাণ করে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও জাতীয় নিরাপত্তা এবং কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
তথ্য সূত্র: সিএনএন