ভ্যাপের কারণে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে নারী! ভয়াবহ পরিণতি!

শিরোনাম: ভ্যাপিং-এর বিপদ: ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি, সতর্কবার্তা দিলেন এক মার্কিন নারী।

ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করে ইলেক্ট্রনিক সিগারেট বা ভ্যাপিং-এর দিকে ঝুঁকেছিলেন ৩৯ বছর বয়সী লয়ডা কর্ডেরো ফ্যালিরো। কিন্তু তার এই সিদ্ধান্ত ডেকে এনেছিল এক চরম বিপদ।

ফুসফুসে মারাত্মক রোগ, যার কারণে এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তিনি। শুধু তাই নয়, স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া কিংবা শোয়া পর্যন্ত তার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ফ্রাঙ্কলিনভিলে বসবাসকারী লয়ডা জানান, ১৮ মাস আগে ধূমপান ত্যাগ করে তিনি ভ্যাপিং শুরু করেন। প্রথমে এটাকে স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে মনে হলেও, দ্রুতই তিনি এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন।

এরপর ফুসফুসে তরল জমা হতে শুরু করে এবং মারাত্মক বায়ু থলি তৈরি হয়। এই রোগের কারণে তিনি এখন গুরুতর অসুস্থ।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, লয়ডার এই অবস্থার প্রধান কারণ হলো ভ্যাপিং। তার ফুসফুসের বায়ুথলি ফেটে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই রোগ মারাত্মক রূপ নিলে তা জীবনের জন্যেও হুমকি স্বরূপ। লয়ডা বলেন, “ডাক্তার বলেছিলেন, আমার ফুসফুসে ভ্যাপিংয়ের কারণে জমা হওয়া তরলের কারণেই এমনটা হয়েছে, যার ফলস্বরূপ আমার ফুসফুসের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।”

বর্তমানে লয়ডার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ অপসারণের কথা চলছে। তিনি জানান, “আমি এখন আর চিৎ হয়ে ঘুমাতে পারি না।

ঘুমালে নিজের থুথুতেই দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই হয় আমাকে বসে থাকতে হয়, অথবা রিক্লাইনারে হেলান দিয়ে ঘুমাতে হয়। এটা অনেকটা জীবন-মরণ সমস্যার মতো।”

চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, অতিরিক্ত শারীরিক কার্যকলাপও তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এমনকি, সামান্য কাজ যেমন— ঘর পরিষ্কার করা, বাসন ধোয়া অথবা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করাও তার জন্য কঠিন।

লয়ডা বলেন, “দুধের একটি বোতল তুলতেও আমার কষ্ট হয়। কারণ, আমার ফুসফুসের অবস্থা এতটাই খারাপ।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমি ভেবেছিলাম ধূমপানের চেয়ে ভ্যাপিং হয়তো স্বাস্থ্যকর হবে। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এটি আমাকে আরও বেশি ধ্বংস করেছে।”

লয়ডার আশঙ্কা, যদি তিনি ভ্যাপিং ত্যাগ না করতেন, তাহলে সম্ভবত আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তাকে লাইফ সাপোর্টে যেতে হতো। তিনি বলেন, “আমি এখনও মা।

আমার দায়িত্ব আছে, এবং আমি আমার নাতি-নাতনিদের জন্য বাঁচতে চাই।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশেও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভ্যাপিংয়ের প্রবণতা বাড়ছে। তাই, লয়ডার এই অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। ভ্যাপিংয়ের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং এর আসক্তি থেকে দূরে থাকাই আমাদের কাম্য।

তথ্যসূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *