নাকবার স্মৃতি: ফিলিস্তিনিদের কান্না, আজও ফেরা হয়নি!

ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য একটি শোকের দিন, যা ‘নাকবা’ নামে পরিচিত, তার ৭৭তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় ফিলিস্তিনিদের যে ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ঘটেছিল, সেই ঘটনার স্মরণে প্রতি বছর ১৫ই মে এই দিনটি পালন করা হয়।

ফিলিস্তিনের রামাল্লা শহরে এদিন মিছিলে অংশ নেয় হাজারো মানুষ। তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনি পতাকা এবং ‘ফিরে আসব’ লেখা প্ল্যাকার্ড।

গাজায়, যেখানে গত ১৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বোমা হামলায় ঘরবাড়ি হারিয়ে মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে, সেখানে কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি হয়নি। গাজার খান ইউনিসের বাসিন্দা মোয়মেন আল-শেরবিনি বলেন, তাদের জীবন যেন এক দীর্ঘ ‘নাকবা’-এর মতো, যেখানে প্রিয়জনদের হারানো, ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়া এবং জীবিকা নির্বাহের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

১৯৪৮ সালে প্রায় ৭ লক্ষ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি নিজেদের ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়েছিল। বর্তমানে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ৫০,০০০ ছাড়িয়েছে।

বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ২৪ লক্ষ মানুষ, যাদের মধ্যে অনেকেই একাধিকবার উদ্বাস্তু হতে বাধ্য হয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজার জনসংখ্যাকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তৃতীয় কোনো দেশ খুঁজে বের করার কথা বলছেন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার মানুষকে বিতাড়িত করে জায়গাটিকে অবকাশ কেন্দ্রে পরিণত করার প্রস্তাব করেছিলেন।

রামাল্লায় ৫২ বছর বয়সী নায়েল নাখলেহ বলেন, “নাকবা দিবস শুধু একটি স্মৃতি নয়, বরং এটি গাজায় আমাদের প্রতিদিনের বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে।” তার পরিবার একসময় ইসরায়েলের জাফার কাছে আল-মাজদাল গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়েছিল।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা এখনো তাদের পুরনো শহর ও গ্রামে ফেরার অধিকারের দাবিতে অবিচল। এই ‘ফিরে আসার অধিকার’ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে চলা আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজায় একটি বিস্তৃত সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যার লক্ষ্য হলো এই ভূখণ্ড জয় করা এবং সেখানকার বাসিন্দাদের গণহারে সরিয়ে দেওয়া।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *