ছোট্ট শহর থেকে পোপ: কিভাবে বেড়ে উঠলেন নতুন ধর্মগুরু?

শিকাগোর এক শ্রমিক শ্রেণির শহরতলী থেকে ভ্যাটিকান পর্যন্ত: পোপ লিও চতুর্দশের উত্থান

বিশ্বের ১.৪ বিলিয়ন ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের নতুন নেতা নির্বাচিত হয়েছেন একজন আমেরিকান – রবার্ট ফ্রান্সিস প্রিভোস্ট, যিনি পোপ লিও চতুর্দশ নাম গ্রহণ করেছেন। তাঁর জীবনযাত্রা, শিকাগোর একটি সাধারণ শহরতলীতে বেড়ে ওঠা, কীভাবে তাঁকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে পৌঁছে দিয়েছে, সেই গল্প তুলে ধরা হলো।

পোপ লিও চতুর্দশের শৈশব কেটেছে ইলিনয়ের ডলটনে, শিকাগোর একটি শ্রমিক শ্রেণির এলাকায়। সেখানকার সেন্ট মেরি অফ দ্য অ্যাজাম্পশন প্যারিশ ছিল তাঁর পরিবারের কেন্দ্র। ছোটবেলায় তিনি বাড়ির বেসমেন্টে খেলতেন এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করতেন।

তাঁর দাদা লুই প্রিভোস্ট হাসতে হাসতে বলেছিলেন, “অনেকেই বলত, একদিন এই ছেলেটাই না পোপ হবে।”

ডলটনের মিশ্র সংস্কৃতির পরিবেশে বেড়ে ওঠা প্রিভোস্টের পরিবারে ছিল গভীর একতা ও সহানুভূতি। তাঁর এক প্রতিবেশী, যিনি ছোটবেলায় তাঁর সঙ্গে একই পাড়ায় থাকতেন, বলেছেন, “আমরা তেমন ধনী না হলেও, কোনো কিছুর অভাব অনুভব করিনি। সবাই আমাদের ভালোবাসত, আমাদের দেখাশোনা করত।

পোপ হওয়ার আগে, প্রিভোস্ট পেরুতে মিশনারি হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি সেখানকার একটি সেমিনারির প্রধান ছিলেন এবং পরে পেরুর নাগরিকত্বও গ্রহণ করেন। ২০১৪ সালে তিনি বিশপ হিসেবে ফিরে আসেন এবং ২০২৩ সালে ভ্যাটিকানে যোগ দেন।

প্রিভোস্টের মা-বাবা দুজনেই ছিলেন শিক্ষাবিদ। তাঁর মা, মিলড্রেড মার Martinez প্রিভোস্ট, ছিলেন একজন গ্রন্থাগারিক এবং চার্চের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন। তিনি গির্জার কোয়ারে গান গাইতেন এবং স্কুলের প্রথম লাইব্রেরি তৈরি করেছিলেন।

তাঁর পরিবার ছিল বিভিন্ন জাতির সংমিশ্রণে গঠিত, যা আমেরিকার ক্যাথলিক চার্চের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করে। তাঁর মায়ের দিকের পূর্বপুরুষ ছিলেন নিউ অরলিন্সের কৃষ্ণাঙ্গ বংশোদ্ভূত।

ছোটবেলায় প্রিভোস্ট ছিলেন পড়াশোনায় খুবই ভালো এবং ধর্মীয় বিষয়ে তাঁর আগ্রহ ছিল অসাধারণ। স্কুলের ধর্ম ক্লাসে তিনি ছিলেন সবার আদর্শ। তাঁর ভাই জন প্রিভোস্ট জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণ ছিল।

পোপ লিও চতুর্দশের জীবনযাত্রা, পরিবার এবং সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগের কারণে তিনি বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে পরিচিত। তাঁর এই অভিজ্ঞতা তাঁকে এক নতুন পথে চালিত করেছে, যেখানে সবার প্রতি সমান আচরণ করা হবে এবং সকলের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা হবে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *