যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, শুল্কের কারণে তাদের পণ্যের দাম বাড়াতে হতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফলে এই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
যদিও বিক্রয়ের পরিমাণ বেশ ভালো ছিল, তবুও শুল্কের বোঝা তাদের মুনাফায় প্রভাব ফেলেছে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছিল, যা এখনো ওয়ালমার্টের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে প্রভাবিত করছে।
ওয়ালমার্টের হিসাব অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখে শেষ হওয়া প্রথম প্রান্তিকে তাদের মুনাফা হয়েছে ৪.৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কম। যদিও এই সময়ে তাদের বিক্রি বেড়েছে, তবুও শুল্কের কারণে লাভের পরিমাণ কমেছে।
কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা পণ্যের দাম কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে শুল্কের উচ্চ হারের কারণে সব খরচ কমানো সম্ভব হচ্ছে না। ওয়ালমার্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডগ ম্যাকমিলন এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা আমাদের পণ্যের দাম যথাসম্ভব কম রাখার চেষ্টা করব, কিন্তু শুল্কের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায়, এমনকি তা কমানোর পরেও, আমরা সব চাপ কমাতে পারছি না।
ওয়ালমার্টের এই ঘোষণার কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বর্তমানে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এর ফলে অনেক আমেরিকান তাদের খরচ কমাচ্ছেন।
ওয়ালমার্টের প্রধানত চীন থেকে পণ্য আমদানি করতে হয়, এবং ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতি তাদের ব্যবসার মূল ভিত্তি, অর্থাৎ কম দামে পণ্য বিক্রির ধারণাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। যদিও সম্প্রতি চীনের পণ্যের ওপর শুল্ক কিছুটা কমানো হয়েছে, তবুও এই পরিবর্তন তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলছে না।
তবে, ওয়ালমার্টের প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যামাজনের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। অ্যামাজন জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের আগেই বিদেশি পণ্য আমদানি করে মজুদ করতে সক্ষম হয়েছে।
অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যান্ডি জ্যাসি জানিয়েছেন, তাদের অনেক থার্ড পার্টি বিক্রেতাও একই কাজ করেছে। এর ফলে, অনেক বিক্রেতা এখনো তাদের পণ্যের দাম বাড়ায়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব বাণিজ্য এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে পরিবর্তন আসতে পারে। যেহেতু ওয়ালমার্ট হলো অন্যতম প্রধান খুচরা বিক্রেতা, তাই তাদের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতি এবং বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষ করে, আমদানি নির্ভরতা রয়েছে এমন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনাপ্রবাহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গতিপথকে প্রভাবিত করতে পারে।
এছাড়া, বাংলাদেশের বাজারেও এর কিছু প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে বিদেশি পণ্যের দামের ক্ষেত্রে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস