ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আমেরিকা ‘খুব কাছাকাছি’ পৌঁছে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, তেহরান তাদের শর্তে ‘এক প্রকার রাজি’ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কাতারের রাজধানী দোহায় এক ব্যবসায়িক গোলটেবিলে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প এমনটা জানান।
ট্রাম্প বলেন, ইরান সম্ভবত তাদের শর্ত মেনে নিয়েছে এবং তারা পরমাণু বোমা তৈরির উপাদান তৈরি করবে না। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরান কোনোভাবেই পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না।
যদিও ইরানের পক্ষ থেকে সরাসরি ট্রাম্পের এই মন্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ’র বরাত দিয়ে জানা যায়, ইরানের কর্মকর্তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন।
এছাড়া, জাতিসঙ্ঘে ইরানের মিশনের কাছেও এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, কাতারে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, তেহরান যদি পরমাণু চুক্তি মেনে চলতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের ওপর আঘাত হানতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে তিনি ইরানের নিজস্ব ভূখণ্ডে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করার বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। উল্লেখ্য, ইউরেনিয়াম পারমাণবিক জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ করা হলে তা অস্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এদিকে, ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের জেরে বিশ্ববাজারে তেলের দামে পতন দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৩ শতাংশের বেশি কমে ব্যারেল প্রতি প্রায় ৬৪ ডলারে নেমে আসে।
একই সময়ে, মার্কিন বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দামও প্রায় ৩.৫ শতাংশ কমে প্রায় ৬১ ডলারে লেনদেন হয়।
অন্যদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ট্রাম্পের এই ধরনের হুঁশিয়ারির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের এমন ধারণা ‘শিশুসুলভ’ যে তিনি এই অঞ্চলে এসে হুমকি দিয়ে তার দাবি আদায় করতে পারবেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, দেশের সম্মান নিয়ে কোনো আপোস করা হবে না।
মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইরানের কর্মকর্তাদের আলোচনা বেশ কয়েক দফা হয়েছে, তবে সর্বশেষ আলোচনা গত সপ্তাহে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে অনুষ্ঠিত হয়। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এই আলোচনাকে ‘কঠিন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন