ফ্রান্সের একটি পরিত্যক্ত সামুদ্রিক উদ্যানে আটকা পড়া দুটি হত্যাকারী তিমি (ওর্কা) এবং ১২টি ডলফিনের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ তাদের জীবনধারণের পরিবেশ ক্রমেই খারাপ হচ্ছে।
জানা গেছে, ফরাসি কর্তৃপক্ষ এখনো এই প্রাণীগুলোর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারেনি।
২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে, মারিনেল্যান্ড অ্যান্টিবেস নামের এই সামুদ্রিক উদ্যানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিবিসি সূত্রে খবর, ফ্রান্স সরকার ডলফিন ও তিমির খেলা প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কারণেই মূলত পার্কটি বন্ধ হয়ে যায়।
একসময় এই ধরনের প্রদর্শনীগুলি দর্শকদের কাছে প্রধান আকর্ষণ ছিল। পার্কটি বন্ধ হয়ে গেলেও, সেখানে এখনো বন্দী অবস্থায় রয়েছে দুটি ওর্কা—মা উইকি (২৩) এবং ছেলে কেইজো (১১)।
তারা দুজনেই জন্ম থেকে বন্দিদশায় রয়েছে।
সম্প্রতি, ‘টাইডব্রেকার্স’ নামের একটি প্রাণী অধিকার বিষয়ক সংগঠন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, পার্কের ট্যাঙ্কগুলোতে শেওলা জমেছে এবং সেখানকার পরিবেশও বেশ খারাপ।
টাইডব্রেকার্স জানিয়েছে, ভিডিওটি ৭ই মে ধারণ করা হয়েছে। তাদের মতে, উইকি ও কেইজো এখনো সেখানে আটকা পড়ে আছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
সংগঠনটি আরও জানায়, “যদি তিমিদের কোনো অসুস্থতা দেখা দেয়, তবে তাদের হয়তো মেরে ফেলা হতে পারে অথবা পরিবেশের কারণে তারা মারা যেতে পারে।” তাদের উদ্বেগের কারণ হলো, এর আগে ইনোক নামের একটি তিমি, ট্যাঙ্কের একটি ছোট ধাতব টুকরো গিলে ফেলার কারণে মারা গিয়েছিল।
প্রাণী অধিকার সংগঠনগুলো বলছে, তাদের প্রধান উদ্বেগ হলো বন্দী প্রাণীগুলোর মুক্তি। তাদের মতে, তিমিদের রক্ষার জন্য উপযুক্ত আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা এখন সময়ের দাবি।
যদিও বর্তমানে ওর্কাদের জন্য কার্যকরী কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নেই, তবে একটি ভালো সমাধান হতে পারে—উইকি এবং কেইজোকে আপাতত ভালো কোনো কেন্দ্রে স্থানান্তর করা।
উইকি ও কেইজোর মুক্তির জন্য কানাডার নোভা স্কোশিয়ায় একটি আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে ‘হুইল স্যাংচুয়ারি প্রজেক্ট’। তাদের পরিকল্পনা হলো, প্রায় ১০০ একর জায়গাজুড়ে একটি সমুদ্র তৈরি করা হবে, যা জাল দিয়ে ঘেরা থাকবে।
তবে ফরাসি সরকার মনে করছে, কানাডায় তাদের সরিয়ে নেওয়াটা উইকি ও কেইজোর জন্য খুব কষ্টকর হতে পারে।
এদিকে, ১২টি ডলফিনের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি।
তাদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বর্তমানে, মারিনেল্যান্ড অ্যান্টিবেসই এই প্রাণীগুলোর দেখাশোনা করছে। তবে তাদের চূড়ান্ত ভাগ্য নির্ধারণ করবে ফরাসি সরকার।
কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।
তথ্যসূত্র: পিপল